
প্রিন্ট: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৩ এএম

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
প্রখ্যাত আইনজ্ঞ, সমাজ সংস্কারক ও লেখক সৈয়দ আমির আলী ১৮৪৯ সালের ৬ এপ্রিল উড়িষ্যার কটকে জন্মগ্রহণ করেন। আমির আলীর প্রপিতামহ ১৭৩৯ সালে নাদির শাহের সৈন্য দলের সঙ্গে ইরান ছেড়ে ভারতীয় উপমহাদেশে আসেন এবং অতঃপর মুঘল ও অযোধ্যার দরবারে চাকরি করেন। সৈয়দ আমির আলীর জন্মের পর তার পিতা সপরিবারে কলকাতা আসেন। সেই থেকে তিনি কলকাতায় থাকতেন। পরবর্তীকালে তারা চীনসুরায় আবাস গড়ে তোলেন। হুগলী মাদ্রাসায় পড়ার সময় তিনি সেখানকার ব্রিটিশ শিক্ষকদের সংস্পর্শে আসেন এবং পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করেন। ১৮৬৭ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসামান্য কৃতিত্বসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৮৬৮ সালে অনার্সসহ ইতিহাসে এমএ পাশ করেন। ১৮৬৯ সালে এলএলবি শেষ করার পর তিনি সরকারি বৃত্তি নিয়ে লন্ডন যান।
সৈয়দ আমির আলী ১৮৭৩ থেকে ১৮৭৮ সাল পর্যন্ত কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে মুসলিম আইনের এবং ১৮৮৪ সালে ঠাকুর আইনের অধ্যাপক ছিলেন। ১৮৭৮-১৮৮১ সালে তিনি কলকাতার চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১৮৯০ সালে কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মুসলিম বিচারপতি নিযুক্ত হন। ১৯০৪ সালে অবসরগ্রহণ করে ইংল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভা ও কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য, হুগলী ইমামবাড়ার সভাপতি, সেন্ট্রাল ন্যাশনাল মোহামেডান অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক এবং ১৯০৯ সালে লন্ডন প্রিভি কাউন্সিলের প্রথম ভারতীয় সদস্য ছিলেন। মর্লি-মিন্টো শাসন সংস্কারে মুসলমানদের রাজনৈতিক দাবির ওপর যে স্বতন্ত্র গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল, তার মূলে ছিলেন তিনি। তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। উনিশ শতকের আশির দশকে তিনি ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক জাগরণের উদ্যোক্তা ছিলেন।
সৈয়দ আমির আলী রচিত বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-অ্যা ক্রিটিক্যাল এগজামিনেশন অফ দ্য লাইফ অ্যান্ড টিচিংস অফ মহম্মদ, দ্য স্পিরিট অব ইসলাম, অ্যা শর্ট হিস্টোরি অব দ্য সারাসিন্স ইত্যাদি।
সৈয়দ আমির আলী ১৯২৮ সালের ৩ আগস্ট ইংল্যান্ডে মারা যান।