Logo
Logo
×

শেয়ার বাজার

তিন বছরে সর্বনিম্ন সূচক, শেয়ারবাজারে আতঙ্ক

Icon

মনির হোসেন

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০৩:১৩ এএম

তিন বছরে সর্বনিম্ন সূচক, শেয়ারবাজারে আতঙ্ক

টানা পতনে ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক। ডিএসইর সূচকের এ অবস্থান গত ৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত সপ্তাহে সূচক প্রায় ২শ পয়েন্ট কমেছে। পতনের এই ধারা কোথায় গিয়ে থামবে, তা পরিষ্কার নয়। এ কারণে শেয়ারবাজারে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে এই মুহূর্তে ফোর্সড সেল (বাধ্যতামূলক) না করার অনুরোধ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে আস্থা সংকটে পুঁজিবাজার। এই সংকট কাটাতে কী উদ্যোগ নিতে হবে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে বলে আসছি, এই বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট রয়েছে। এই সংকট কাটাতে উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে করণীয় দুটি-সুশাসন এবং ভালো কোম্পানির শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানো।

তিনি বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কারসাজির শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের নিশ্চয়তা দিতে হবে, কারসাজির মাধ্যমে কেউ তার টাকা হাতিয়ে নিলে বিচার হবে। না হলে ঝুঁকি নিয়ে কেউ বিনিয়োগে আসবে না। 
ফ্লোর প্রাইস (নিম্নসীমা) উঠে যাওয়ার পর বাজারে টানা দরপতন চলছিল। এরপর রোববার বাজারে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় আইটি বিপর্যয় হয়। এতে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও কমেছে। এ অবস্থায় তারা শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন। ফলে গত এক সপ্তাহে সূচক প্রায় ২শ পয়েন্ট কমেছে। এছাড়াও সূচকে একটি মনস্তাত্ত্বিক সীমা ছিল ৬ হাজার পয়েন্ট। অর্থাৎ সাম্প্রতিক সময়ে সূচক ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নামেনি। কিন্তু বুধবার তাতে ছন্দপতন হয়। ডিএসইর ব্রড সূচক এদিন আগের দিনের চেয়ে ৩২ কমে ৫ হাজার ৯৭৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসইর প্রধান সূচকের এই অবস্থা গত ৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২১ সালের ৫ মে সূচক ৫ হাজার ৮৮৪ পয়েন্টে নেমেছিল। তবে এর আগে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই সূচক ৫ হাজার ৯৮০ পয়েন্টে নামলেও অবস্থান বুধবারের চেয়ে উপরে ছিল। অর্থাৎ ৩ বছরেও সূচক এত নিচে নামেনি। এ অবস্থায় বাজারে আতঙ্ক রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বের হয়ে যাচ্ছেন। এটি বাজারের জন্য আশঙ্কার কারণ। তবে বিএসইসি থেকে বাজার ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে মার্জিন ঋণের বিপরীতে ফোর্সড সেল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কোনো কোনো হাউজকে শেয়ার কেনার অনুরোধ করা হয়েছে।

সামগ্রিকভাবে বুধবার ডিএসইতে ৩৯৪টি কোম্পানির ১৫ কোটি ৬৯ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মোট মূল্য ৪৮৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১১২টি কোম্পানির শেয়ারের, কমেছে ২২২টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। প্রধান সূচকের বাইরে ডিএসই-৩০ মূল্যসূচক বুধবার আগের দিনের চেয়ে ৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫৬ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩শ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসইর বাজার মূলধন আগের দিনের চেয়ে আরও কমে ৭ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে। 

শীর্ষ দশ কোম্পানি : বুধবার ডিএসইতে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে সেগুলো হলো- তৌফিকা ফুড, ফু-ওয়াং সিরামিক, গোল্ডেন সন, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এসএস স্টিল, ওরিয়ন ইনফিউশন, জিপি, সেন্ট্রাল ফার্মা, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো এবং মুন্নু ফেব্রিক্স। ডিএসইতে বুধবার যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি বেড়েছে সেগুলো হলো- এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন সন, মুন্নু ফেব্রিক্স, তৌফিকা ফুডস, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইভিন্স টেক্সটাইল, আফতাব অটোমোবাইলস এবং কাট্টালী টেক্সটাইল। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি কমেছে সেগুলো হলো-কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, রূপালী ব্যাংক, তাল্লু স্পিনিং, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, ফাইন ফুডস এবং এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম