ফ্লোর প্রাইসে আটকা দুই শতাধিক কোম্পানি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:২১ পিএম
দেশে ইতোমধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় স্থবির শেয়ারবাজার। বেশিরভাগ কোম্পানিতে লেনদেন হচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ অস্থিরতা ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস (নিম্নসীমা) দিয়ে বাজার আটকে রাখা হয়েছে। এ কারণে গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২ শতাধিক কোম্পানির লেনদেন হয়নি। এ অবস্থা টানা কয়েক মাস পর্যন্ত চলছে। বিশ্লেষকরা বলছেন ফ্লোর প্রাইস না তুলে বাজার ইতিবাচক হবে না। অন্যদিকে ডিএসইতে মোট লেনদেনের ৩০ শতাংশই ছিল শীর্ষ ১০ কোম্পানির।
প্রসঙ্গত, ফ্লোর প্রাইস হলো শেয়ার দাম কমার নিæসীমা। করোনার সময় অস্থিরতা ঠেকাতে নতুন নিয়ম চালু করে বিএসইসি। এর নাম শেয়ারের ‘ফ্লোর প্রাইস’। এক্ষেত্রে কোনো শেয়ারের দামের ভিত্তি হবে আগের ৫ দিনের সর্বশেষ লেনদেনের (ক্লোজিং প্রাইস) গড় দর। কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইসের নিচে নামতে পারবে না। কিন্তু দাম ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারবে। এরপর ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হলেও, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে দরপতন ঠেকাতে গত বছরের ২৮ জুলাই পুঁজিবাজার দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস দেয় বিএসইসি। এখনও সেটি বহাল আছে। এর ফলে বর্তমানে ২ শতাধিক কোম্পানির লেনদেন আটকে আছে। এতে যারা ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন, তারা সবচেয়ে বেশি বিপদে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৪০৩টি লেনদেনের জন্য প্রস্তুত ছিল। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৫টি কোম্পানির শেয়ারের, কমেছে ৬৯টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর ব্রড সূচক ছিল ৬ হাজার ২৬৭ পয়েন্ট। সপ্তাহ শেষে তা ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৭১ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। গত সপ্তাহে ৫ দিনে ডিএসইতে ২ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৫১৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে ৫ দিনে ২ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। প্রতিদিন গড়ে ৪৩৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। এ হিসাবে গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৪০২ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন কমেছে ৮০ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে যা ১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে ডিএসইর বাজারমূলধন ৫ হাজার কোটি টাকা কমে ৭ লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। এর সঙ্গে একটি কারসাজি চক্র জড়িত। অন্যদিকে বহুজাতিক কোম্পানিসহ বাজারের শক্ত মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের দাম নিচে রয়েছে।
এদিকে সপ্তাহজুড়ে শীর্ষ দশ কোম্পানির ৭৭৩ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। একক কোম্পানি হিসাবে গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ফুয়াং ফুড। আলোচ্য সময়ে এ কোম্পানির লেনদেন ১৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এমারেল্ড ওয়েলের লেনদেন ১০৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
এছাড়াও দেশবন্ধু পলিমারের লেনদেন ৭৬ কোটি ৮৯ লাখ, বিচ হ্যাচারি ৭১ কোটি ৮৪ লাখ, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স ৮৯ কোটি ৯৮ লাখ, এপেক্স ফুটওয়্যার ৬১ কোটি ৬৮ লাখ, বাংলাদেশ মনোসপুল অ্যান্ড পেপার ৬১ কোটি ৬৫ লাখ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স ৬০ কোটি ৪১ লাখ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ৫৯ কোটি ৪৬ লাখ এবং সমতা লেদারের ৫৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।