জামায়াতের ৪ দফা কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমাজ সেবা

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৬ এএম
-67db67b96ce56.png)
একটি পরিবার স্বাবলম্বী হলেই সমাজ ও রাষ্ট্র স্বাবলম্বী হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামীর চার দফা কর্মসূচির অন্যতম হচ্ছে সমাজ সংস্কার ও সমাজ সেবা। জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে পরিবারের হাত ধরেই সমাজ ও রাষ্ট্র স্বাবলম্বী হবে। সেজন্য জামায়াতে ইসলামী সমাজের সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য নানামুখী কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে। এরই অংশ হিসেবে প্রতি বছর শতশত নারী-পুরুষকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বুধবার বিকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ শেষে নারীদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি এবং মানবিক সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে বন্যা, অগ্নিসংযোগ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান করা হয়। স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করা হয়। এছাড়াও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ১০ টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। যেগুলো ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের অসহায় ও দরিদ্র মানুষের বিনামূল্যে সার্ভিস প্রদান করে আসছে। সমাজ সেবার অংশ হিসেবেই জামায়াতে ইসলামী এসব কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এসব কার্যক্রম পরিচালনা আমরা, আমাদের দায়িত্ববোধ থেকে করে আসছি। আমরা প্রমাণ করে দেখিয়েছি সমাজ সেবা করতে ক্ষমতায় যাওয়া লাগে না। নৈতিকতা, আদর্শ আর ইচ্ছে থাকলেই সমাজ সেবা করা যায়।
নূরুল ইসলাম বুলবুল আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী ব্যাপক ভিত্তিক সমাজ সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই কার্যক্রমের আওতায় অসংখ্য নারী-পুরুষ স্বাবলম্বী হয়েছে। যাদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানের পর সেই কাজে নিয়োজিত করতে জামায়াতে ইসলামী সার্বিক সহায়তা করেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ইসলাম মানে হচ্ছে হানাহানি, রক্তপাত মুক্ত একটি শান্তিময় সমাজ। ইসলামী রাষ্ট্রের কাছে নাগরিকদের ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয় না। নাগরিক হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। জামায়াতে ইসলামী সমাজে ইসলামের বিধান বাস্তবায়ন করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসলামী সমাজ ব্যতিত সমাজের নাগরিকদের সমান মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা হয় না। নাগরিকদের সমান মর্যাদা ও অধিকারের জন্য প্রত্যেক নাগরিককে স্বনির্ভর করতে হবে। ব্যক্তি স্বনির্ভর হলে সমাজ স্বনির্ভর হবে, সমাজ স্বনির্ভর হলে রাষ্ট্র স্বনির্ভর হবে। তাই জামায়াতে ইসলামী সমাজের তৃণমূল থেকে প্রত্যেক ব্যক্তিকে স্বনির্ভর করতে কাজ করছে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না গিয়েও জামায়াতে ইসলামী নিজস্ব অর্থায়নে সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আগামীতে জনগণ জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিলে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি নাগরিককে স্বনির্ভর করে তোলা হবে। প্রতিটি নাগরিক আত্মমর্যাদাশীল হবে। জামায়াতে ইসলামীর হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গেলে রাষ্ট্রের সম্পাদের সঠিক ব্যবহার হবে। আগে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিল তাদের সব দলীয় সরকারই জনগণের সম্পদ বিদেশে পাচার করার কাজে নিয়োজিত ছিল। পাচার হওয়া সকল অর্থ জামায়াতে ইসলামী দেশে ফিরে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও মন্তব্য করেন।
পল্টন থানা আমির শাহীন আহমেদ খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি মো. আব্দুস সালামসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ও পল্টন থানা জামায়াতে ইসলামীর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।