জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তির বিভেদে স্বাধীনতা বিপন্ন হবে: মামুনুল হক

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:২০ পিএম

ফাইল ছবি
‘জাতীয়তাবাদী শক্তি ও ইসলামী শক্তির মধ্যে বিভেদ হলে দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘হিফজুল কোরআন ও কোরআন তেলোয়াত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব এবং পুরস্কার বিতরণী’ অনুষ্ঠানে বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন।
মামুনুল হক বলেন, রাজনৈতিকভাবে আপনারা (বিএনপি) একটা আদর্শের রাজনীতি করেন, আমরা আরেকটা আদর্শের রাজনীতি করি। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তি এবং ইসলামী শক্তি পরস্পর সহযোগিতার মাধ্যমেই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে। যদি জাতীয়তাবাদী শক্তি ও ইসলামী শক্তির মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়, বাংলাদেশ বিপন্ন হবে, বাংলাদেশবিরোধী ফ্যাসিবাদী শক্তি আবার শক্তিশালী হবে। যারা বাংলাদেশ থেকে ইসলামকে মুছে ফেলতে চায়, তারাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রু, তারাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার দুশমন।
শেখ হাসিনার শাসনামলে আলেম সমাজের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, ‘এই স্বাধীনতার শত্রুরা, এই শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় নির্মম অত্যাচার হলো বাংলাদেশের আলেমসমাজকে জাতির কাছে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছেন। যতজন আলেমকে তারা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছেন, যতজন আলেমকে নির্মম অত্যাচার করেছেন, প্রত্যেকজন আলেমের সঙ্গে এমন নির্দয় আচরণ করেছেন-চরিত্রহননের জন্য ফেরাউন, নমরুদ যে আচরণ করেছিল, শেখ হাসিনা সেই আচরণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রমাণ দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারব একজন নমরুদ, একজন ফেরাউন, একজন কারুন, আরেকজন মুনাফেক সর্দার আবদুল্লাহ ইবনে উবাই এ চারটাকে এক পাত্রে গুলালে একটা শেখ হাসিনা তৈরি হয়। এজন্য শেখ হাসিনা ও তার প্রেতাত্মাদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর কোনোদিন পুনর্বাসিত হতে দেওয়া যাবে না। যে কোনো মূল্যে সেটাকে রুখতে হবে।’
মামুনুল হক বলেন, অনেকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে এক পাল্লায় পরিমাপ করে। আমি মনে করি, এটা অবিচার। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কেউই ইসলামি রাজনীতি করে না। বরং তাদের ভিন্ন রাজনৈতিক দর্শন রয়েছে। তবে এ দুটির মধ্যে অনেক ব্যবধান রয়েছে। ঠিক যেমনিভাবে আবু জাহেল ও আবু তালেব-কেউ কিন্তু ইসলামের পথে অনুসারী ছিলেন না। কিন্তু কেউ যদি আবু জাহেল ও আবু তালেবকে এক পাল্লায় মাপে তার চেয়ে বড় জালেম আর কেউ হতে পারে না। আমি মনে করি, ইসলামি রাষ্ট্রের দৃষ্টি থেকে বিএনপি আবু তালেবের ভূমিকায় আর আওয়ামী লীগের আগাগোড়াই আবু জাহেলের ভূমিকা। কাজেই এজন্য বিএনপিকে এ কথা মনে রাখতে হবে, তার নেতৃত্বকে এই কথা মনে রাখতে হবে।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আরেক যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন প্রমুখ।