বীণা সিক্রির বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ০৯:২১ পিএম

জামায়াতকে নিয়ে ভারতের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক বীণা সিক্রির বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ভারতের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক বীণা সিক্রি সম্প্রতি ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনে প্রকাশিত একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যেসব ভিত্তিহীন ও মিথ্যা মন্তব্য করেছেন আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জামায়াত সম্পর্কে তিনি যেসব মন্তব্য করেছেন তার মধ্যে সত্যের লেশমাত্রও নেই। তার বক্তব্যগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। তার বক্তব্য থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, জামায়াত সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণ অজ্ঞ।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, তিনি ‘জামায়াত আইএসআইর বাহক ছিল এবং দলটি (জামায়াত) পাকিস্তানের প্রভাবের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে’ মর্মে যে মন্তব্য করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। তার এ মন্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক নেই। জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার হীন উদ্দেশ্যেই তিনি উল্লেখিত বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন।
গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, তিনি ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সংবিধানকে সর্বোচ্চ দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না এবং ইসলামী ছাত্রশিবির অস্ত্র লুট করেছিল ও এসব অস্ত্র এখনো ব্যক্তিগত হাতে রয়েছে’ মর্মে যেসব ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও কাল্পনিক মন্তব্য করেছেন তার নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা আমাদের জানা নেই। তার ঐ ভিত্তিহীন মিথ্যা মন্তব্যের জবাবে আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ১৯৭৯ সালে জন্মের পর থেকেই বাংলাদেশের সংবিধান মেনে এ দেশে নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনীতি করছে। জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ বাংলাদেশের সংবিধান মেনে মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখনো জামায়াত দেশের সংবিধান মেনেই রাজনীতি করছে। এ থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, বীণা সিক্রি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, তার (বীণা সিক্রি) বক্তব্যের জবাবে আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই যে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা কোনো থানার অগ্নিসংযোগ করে অস্ত্র লুট করেনি। কাজেই তাদের হাতে অস্ত্র থাকার প্রশ্নই আসে না। কোনো একটি দেশের রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রম ও তৎপরতা সম্পর্কে ফ্যাসিবাদের দোসরদের মতো একই ভাষায় কথা বলা এবং ভিত্তিহীন ও অসত্য মন্তব্য করা অপর একটি দেশের কোনো কূটনীতিকের জন্য সমীচীন নয় বলে আমরা মনে করি। আমি আশা করি, ভারতের সাবেক কূটনীতিক বীণা সিক্রি জামায়াত ও ছাত্রশিবির সম্পর্কে ভিত্তিহীন মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকবেন এবং জামায়াত ও ছাত্রশিবির সম্পর্কে ভিত্তিহীন মিথ্যা বানোয়াট মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করবেন।
এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি. মিলাম এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপ-রাষ্ট্রদূত জন ড্যানিলোভিচ। সোমবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাক্ষাৎকারটি অত্যন্ত আন্তরিক ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাক্ষাৎকালে তারা পারস্পরিক কুশল বিনিময় করেন। এ সময় বাংলাদেশে বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতি বিশেষ করে আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, নির্বাচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও মানবাধিকারসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা খোলামেলা আলোচনা করেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান পারস্পরিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।