ধর্ষণ ইস্যুতে এক কাতারে বাকৃবির সব ছাত্র সংগঠন

বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৪ এএম

মতবেদ, আক্রমণ, দ্বন্দ্ব সব কিছু পেছনে ফেলে এক কাতারে এসেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ছাত্র সংগঠনগুলো। নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে এক কাতারে হয়েছে তারা। এক হয়ে করেছে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ।
রোববার সন্ধ্যায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়
বাকৃবিতে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী
ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা
অংশ নেয়।
মিছিলটি টিএসসি, উপাচার্যের বাসভবনের সামনের রাস্তা হয়ে কেআর মার্কেটে
গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের
ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এসব অপরাধের দ্রুত
বিচার দাবি করেন। তারা ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হলে আন্দোলন চালিয়ে
যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, আছিয়া, আছিয়া’, ‘আছিয়ার কান্না আর না, আর না’ ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন, বিচার চাই, বিচার চাই’, ‘ধর্ষকদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘দড়ি লাগলে দড়ি নে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে ফাঁসি দে’, ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন, জাহাঙ্গীর, জবাব দে, জবাব দে’, ‘জনে জনে খবর দে ধর্ষকের কবর দে’ স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আতিকুর রহমান,
সদস্য সচিব মো. শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বাকৃবি শাখার সভাপতি ফখরুল
ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাসির ত্বোহা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাকৃবি
শাখার আহ্বায়ক আজিজুল হক আজিজ, ছাত্র ইউনিয়নের বাকৃবি শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক,
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সঞ্জয় রায়সহ আরও অনেকে।
প্রতিবাদ সমাবেশে বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান বলেন,
‘জুলাই আন্দোলনে আমরা বুকের রক্ত ঝরিয়েছি একটি আদর্শ ও স্বপ্ন নিয়ে। কোনো ধর্ষকের আশ্রয়
দেওয়ার জন্য নয়। এ দেশে এখন একটি শিশুও নিরাপদ নয়। আমরা চাই, সব শিক্ষার্থী ও সাধারণ
মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত হোক, যাতে সবাই নিরাপদে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
আমরা সকল ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
ইসলামী ছাত্রশিবির বাকৃবি শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে
আমাদের বোনেরা আর নিরাপদ নয়। আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছি। আমরা এমন একটি
সমাজ চাই, যেখানে নারীরা নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক
বিচার হবে না, ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাবে না এবং নারীরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে
না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাকৃবি শাখার আহ্বায়ক আজিজুল হক বলেন,
‘২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে এ ধরণের ধর্ষণের ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্ষকদের একমাত্র
উপযুক্ত শাস্তি হলো ফাঁসি। যতদিন তাদের ফাঁসি কার্যকর না হবে, ততদিন আমাদের আন্দোলন
চলবে।’

