নির্বাচনের কথা বললেই তাদের গায়ে জ্বালা ধরে: বিএনপি নেতা

মিরপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৬ পিএম

বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টারা বিএনপির নাম শুনলে ও নির্বাচনের কথা বললেই তাদের গায়ে জ্বালা ধরে যায়।তারা কেন জানি নির্বাচনকে মেনে নিতে পারে না।
রোববার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশন উত্তর ইবরাহীমপুর দরুল উলুম মাদ্রাসা মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর কাফরুল থানা বিএনপির কর্মিসভা ও রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১৭ বছর ধরে বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম করছে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কিছু উপদেষ্টা বলছেন রাষ্ট্রীয় সংস্কার এবং স্বৈরাচারের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে যাবেন না তারা।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার এদেশের প্রত্যেকটি সাধারণ মানুষ চায়। আমরাও চাই। স্বৈরাচারের বিচার এবং সংস্কারের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।
নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মন্তব্য করে আমিনুল বলেন, এদেশের মানুষ গত ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারে নাই। মানুষ ভোট দিতে চায়। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থিতিশীলতা ফিরে আনতে এবং স্বৈরাচারের বিচার করতে দেশে একটা নির্বাচিত সরকার দরকার। জনগণের সেই নির্বাচিত সরকারই পারবে দেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও ধ্বংসাত্মক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কার এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসররা গত ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের ওপরে যে হত্যাযজ্ঞ ও বর্বরতা চালিয়েছে তার বিচার করতে।
তিনি বলেন, সংস্কার এবং শেখ হাসিনার বিচারের নামে জাতীয় নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে এদেশের জনগণ কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি সুস্থ ধারার রাজনীতির পরিবেশ তৈরি করব।বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যেকটি দাবি পূরণ করতে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করব। মানুষের বাকস্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া ধ্বংসস্তূপ হওয়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেরামতের জন্য কাজ করব। এজন্যই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার রূপরেখা দিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ছয় মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতভাগ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসেও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো পর্যন্ত স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসেনি। দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, খুন, ধর্ষণ ও মব সন্ত্রাসে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। এর দায় এই অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে।
আমিনুল হক বলেন, স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে আমরা দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সোনার বাংলাদেশ গড়তে চাই।কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন পর্যন্ত স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা বিদেশি প্রভুদের সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি করছে।আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি গোষ্ঠী মব জাস্টিসের নামে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। একটা সভ্য দেশে, গণতান্ত্রিক দেশে, স্বৈরাচারমুক্ত দেশে এটা কখনোই আমরা সমর্থন করি না।
কাফরুল থানা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ একরাম হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে এবং থানা যুগ্ম আহ্বায়ক আকরামুল হক আকরাম ও সাব্বির দেওয়ান জনির যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মামুন হাসান, তারিকুল আলম তেনজিং, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মো. মোস্তফা জামান, মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দিন আফাজ, শাহ আলম, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, আশরাফুজাহান জাহান, রেজাউর রহমান ফাহিম, ডা. একেএম কবির আহমেদ রিয়াজ, জিয়াউর রহমান জিয়া, আবুল হোসেন আব্দুল, হাফিজুল হাসান শুভ্র, মনিরুল আলম রাহিমী, মাহাবুবুল হক ভূঁইয়া শাহিন, হাজী নাসির উদ্দিন, নুরুল হুদা ভূঁইয়া, এএফএম খালেদ, এমএস আহমাদ আলী, ইব্রাহিম খলিল, মাহাবুবুর রহমান, হান্নানুর রহমান ভূঁইয়া, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, তাসলিমা রিতা, কাফরুল থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবর রহমান রাব্বি, স্বেচ্ছাসেবক দল উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মহসিন সিদ্দিকী রনী, জাসাস মহানগর সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন আনু, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিমের সাধারণ সম্পাদক আকরাম আহমেদ, খিলক্ষেত থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক সিএম আনোয়ার হোসেন, কাফরুল থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুর রহমান মন্টু, কাজি আরিফুল হোসেন টুটুল, তালুকদার রুমি, জিএস কামাল, আহাদ আলী খন্দকার, থানা কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন, ওয়াহিদ আলম, শাহাদাত হেসেন, হেলাল উদ্দিন হেলাল, শাহাদাত হোসেন, রবিন সর্দার, ইয়াকুব হোসেন কোয়েল, আসাদুর রহমান সাগর, মো. রুবেল প্রমুখ।