আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি প্রত্যাশিতভাবে ক্ষমতায় আসবে: এএফপি

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৫, ১০:৪১ পিএম

আগামী বছরের মার্চের মধ্যে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ব্যাপকভাবে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে যে দেশের অন্যতম পুরোনো রাজনৈতিক শক্তি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এতে জিতবে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষাৎকার নিয়ে করা একটি প্রতিবেদনের একটি অংশে এ কথা বলেছে এএফপি।
গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে এনসিপির। বিএনপির যুক্তি—জনগণের ম্যান্ডেটের একটি সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
গত বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে সাক্ষাৎকারটি দেন নাহিদ। আজ শুক্রবার তা প্রকাশ করা হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা দেরিতে নির্বাচন চাই বলে একপ্রকার অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, এটি সত্য নয়।
এএফপিকে নাহিদ আরও বলেন, হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে এখনো সমস্যার মুখে পড়ছে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আয়োজন করা ‘সম্ভব নয়’।
এএফপি বলছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সবচেয়ে পরিচিত মুখগুলোর একটি নাহিদ ইসলাম। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে যোগ দেন তিনি। সম্প্রতি সরকার থেকে পদত্যাগ করেন নাহিদ। এরপর তার নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ হয় তরুণদের নতুন দল এনসিপির।
বাংলাদেশে সুদূরপ্রসারী সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, এমনকি তরুণেরা যে কারণে জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেসব সংস্কারেও আগ্রহী নন তারা।
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থান এবং এর পরবর্তী সময়ে আমরা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়নে আমাদের একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ কারণে আমরা একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
নাহিদ ইসলাম মনে করেন, তিনি ও তার দলের নেতারা যদি আগামী সরকার গঠন করতে না-ও পারেন, তারপরও তারা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তির সূচনা করবেন, যা আগামী কয়েক দশক ধরে প্রভাব বজায় রাখবে। তিনি বলেন, কেউই জানতেন না, একটি অভ্যুত্থান হবে। তবে এটি হয়েছে। আমি আন্তরিকতার সঙ্গে আশা করি এবং বিশ্বাস করি যে আমরা এবার বিজয়ী হতে চলেছি। তবে এই নির্বাচনই পৃথিবীর শেষ নয়...আমাদের লক্ষ্য হলো এই শক্তিটাকে আরও ৫০ বা ১০০ বা বেশি বছর টিকিয়ে রাখা।
জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করেন—এমন সব মতাদর্শের মানুষের জন্য নিজেদের দলকে উন্মুক্ত রেখেছে এনসিপি। তবে গত মাসের প্রতিষ্ঠার পর দলের অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় আলোচনার সৃষ্টি করেছে। দল গঠনের পর ডানপন্থীদের দাবির মুখে এনসিপির কমিটি থেকে সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা সবার অন্তর্ভুক্তিতে বিশ্বাস করি। তবে ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের কারণে সুনির্দিষ্ট কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
এনসিপিতে এখনো প্রশংসা করার মতো বৈচিত্র্য রয়েছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা (দলে) নারীদের সামনে এনেছি এবং সব বর্ণ ও ধর্মের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করেছি। সব নাগরিক যেন তাদের অধিকার ভোগ করতে পারেন, আমরা সে চেষ্টা করব।