Logo
Logo
×

রাজনীতি

গণমানুষের নেতা হতে পেরেছিলেন নোমান: আমির খসরু

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম

গণমানুষের নেতা হতে পেরেছিলেন নোমান: আমির খসরু

৬৮ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে চিরবিদায় নিয়েছেন চট্টগ্রামের বর্ষীয়ান বিএনপি নেতা, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান। শুক্রবার বাদ আসর রাউজান উপজেলার গহিরা হাই স্কুল মাঠে শেষ জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে চির শয়ানে শায়িত করা হয়।

এর আগে চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় তার প্রধান জানাজা। এতে ওই মসজিদের খতিব অধ্যক্ষ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ইমামতি করেন। জানাজায় হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। জানাজার আগে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতারা তাদের প্রিয় নেতাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। এখানে ফুলে ফুলে ভরে যায় তার কফিন। নেতাকে এক নজর দেখার জন্য দুপুর থেকেই ভিড় করতে থাকেন নেতাকর্মীরা।

চট্টগ্রামে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর জানাজায়ও হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছিল। তারপর কোনো রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আবদুল্লাহ আল নোমানের জানাজায় নেতাকর্মীসহ চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের ঢল নামে। জমিয়তুল ফালাহার বিশাল মাঠ ছাড়িয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েও নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নোমান ভাই ছিলেন পরিপূর্ণ একজন রাজনীতিবিদ। উনি ছাত্রনেতা ছিলেন। কৃষক নেতা ছিলেন। সামাজিক আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী ও ভদ্র মানুষ। রাজনীতিতে বর্তমানে বিনয়ের অভাব আছে। অথচ আমাদের রাজনীতিতে তার প্রতিফলন থাকা দরকার। উনি রাজপথে আন্দোলন করেছেন। যেখানে যখন দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন সেখানে আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে তার সঙ্গে নেতাকর্মীদের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এটার প্রমাণ হচ্ছে তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি। বর্তমানে কানেকটেড রাজনীতি থেকে বাংলাদেশ অনেকদূর পিছিয়ে গেছে। গণমানুষের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকলে নেতা হওয়া যাবে না; কিন্তু  নোমান ভাই গণমানুষের নেতা হয়েছিলেন।

চট্টগ্রামের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিগত বিএনপি সরকারের আমলে যেসব উন্নয়ন চট্টগ্রামে হয়েছে তার প্রায় সবই হয়েছে আবদুল্লাহ আল নোমানের হাত ধরে। তার উন্নয়নের সুফল এখনো চট্টগ্রামবাসী ভোগ করছেন।

নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান তূর্য বলেন, আমার বাবা কখনো মানুষের মনে কষ্ট দিতে চাইতেন না। কারো কাছ থেকে কষ্ট পেলে সেটাও বলতেন না। নীরবে মানুষের সেবা করে গেছেন। তার ৮২ বছর বয়স থেকে ১৪ বছর বাদ দিলে বাকি ৬৮ বছরই ছিল তার রাজনৈতিক জীবন। এই জীবনে তিনি মানুষের উপকার ছাড়া অপকার করার চিন্তা করেননি। সন্তানদেরকেও সেবা ও উপকার করার সেই শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তিনি তার বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।

আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণ করে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির উত্তর জেলার সভাপতি গোলাম আকবর খোন্দকার, সিপিবি নেতা ও আবদুল্লাহ আল নোমানের রাজনৈতিক সহকর্মী কমরেড শাহ আলম, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতে ইসলামীর আমির শাহজাহান চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ইদ্রিস মিয়া, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, আনজুমান ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় ধানমন্ডির বাসভবনে আবদুল্লাহ আল নোমান ইন্তেকাল করেন। সেদিন বাদ জোহর ধানমন্ডি ঈদগাঁ জামে মসজিদে প্রথম জানাজা দুপুর আড়াইটায়, সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ২য় জানাজা, নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে বাদ আসর তৃতীয় জানাজা, শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম নগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে চতুর্থ জানাজা, জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে ৫ম ও প্রধান জানাজা এবং সর্বশেষ রাউজানের গহিরায় ষষ্ঠ জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম