Logo
Logo
×

রাজনীতি

মাহমুদুর রহমান মান্না

সংস্কার অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ, লাফিয়ে পার হওয়া যাবে না

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম

সংস্কার অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ, লাফিয়ে পার হওয়া যাবে না

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, দেশ এখন একটি সর্বজন ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে হাঁটছে। সেই লক্ষ্যে সংস্কার একটি অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ, যা লাফিয়ে পার হওয়া যাবে না। 

রোববার রাজধানীতে নাগরিক ঐক্যের কার্যালয় সংলগ্ন অডিটোরিয়ামে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির এক প্রতিনিধি সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিন সারাদেশ থেকে আগত ২০টি জেলা এবং ৮৫টি উপজেলার মোট ১৮২ জন প্রতিনিধি এ সভায় যোগদান করেন। প্রতিনিধি সভার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান এবং বাংলাদেশের রাজনীতি’। 

এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটি একই শিরোনামে ৬৪ পৃষ্ঠার একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে, যা উপস্থিত প্রতিনিধিদের মাঝে বিতরণ করা হয়। 

সভার শুরুতে সভার সভাপতি এবং নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি এবং বর্তমানে তার পরিস্থিতির ওপরে একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান মূলত ১৫ বছর ধরে চলা শেখ হাসিনার জুলুমের শাসন, গ্রেফতার, নির্যাতন, হত্যা, ক্রসফায়ার, আয়নাঘর, কোটি কোটি টাকা লুটপাটের বিরুদ্ধে জনতার পুঞ্জিভূত বিক্ষোভের ফসল। এই অভ্যুত্থান কোনো সুপরিকল্পিত বিষয় ছিল না। ছিল জানবাজি লড়াইয়ের স্বতঃস্ফূর্ত সাহসী আত্মদান এবং হার না মানা লড়াইয়ের এক অনন্য উদাহরণ। যার ফলশ্রুতিতে পৃথিবীর ইতিহাসে বর্বর, ঘৃণ্য এবং নৃশংস স্বৈরশাসকের পতন ঘটে। 

মান্না আরও বলেন, যদিও ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময় লেগেছিল। তারপরও বলতে হবে অভ্যুত্থান ছিল একটি নিশ্ছিদ্র শৃঙ্খলার অনন্য উদাহরণ। বিতর্ক অবশ্য উঠেছিল, এতো বড় অভ্যুত্থানের পরেও শেখ হাসিনার বাধ্যগত রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে কেন শপথ নেওয়া হলো। এ কথা মানতে হবে যে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চিন্তা থেকে যারা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে, তারা যথাসাধ্য একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করার চেষ্টা করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেছেন যে, গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে তিনি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাখতে চান। 

দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর কাদিরের পরিচালনায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রউফ মান্নান, জিন্নুর আহমেদ চৌধুরী দিপু, মোফাখ্খারুল ইসলাম নবাব, সাংগঠনিক সম্পাদক কবির হাসান, সাকিব আনোয়ার, দপ্তর সম্পাদক মহিদুজ্জামান মহিদ, নারী ঐক্যের আহ্বায়ক শাহনাজ হক রানু, সদস্য সচিব ফেরদৌসী আক্তার সুমি, কেন্দ্রীয় সদস্য গোলাম মোস্তফা ব্যানার্জী, আব্দুর রাজ্জাক রাজা, আজিজ চৌধুরী, সারাদেশ থেকে আগত ১৯ জন প্রতিনিধি। 

আলোচনায় সবচেয়ে প্রাণবন্ত বিষয় হয়ে আসে ৫ আগস্টের পরবর্তী অবস্থা। বক্তারা বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ক্ষমতা থেকে ‘এ’ বিতাড়িত হবার পর তার জায়গা দখল করেছে ‘বি’ এবং মানুষ এই দুই শক্তির আচরণে কোনো পার্থক্য করতে পারছে না। 

এ প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ ভালো প্রার্থীর খোঁজে থাকবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, সেটা খুব পরিদৃষ্ট হচ্ছে না। আমাদের তাই আগামী নির্বাচনকে আরও গভীরভাবে দেখতে হবে। আমাদের চেষ্টা হবে জনগণের সঙ্গে নতুন বাংলাদেশ তথা একটি কল্যাণরাষ্ট্র গড়ে তোলার উপযুক্ত ব্যক্তিত্ব আমরা হাজির করতে পারি কি—না। 

বক্তারা বলেন, আন্তরিকভাবে লড়াই করার কারণে এবং ধারাবাহিকভাবে জনতার মুক্তি আন্দোলনে সাহসী লড়াইয়ের কারণে আমাদের নেতৃত্বে একটি পজিটিভ ইমেজ প্রায় সারা দেশে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু ১৫ বছর একটি প্রচন্ড স্বৈরশাসন চলার কারণে আমাদের সংগঠন তেমন বিকাশ লাভ করতে পারেনি। এখন গণতন্ত্র বিজয়ের পথে, সঠিক রাজনীতি চর্চা করার পাশাপাশি সংগঠন গড়ে তোলার প্রতি বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। 

এই আলোচনার সূত্র ধরে প্রায় সমস্ত বক্তাই ৩০০ আসনে দলগত বা জোটগত প্রার্থী দেবার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম