আ.লীগের বিচার শুরুর আগে কোনো নির্বাচন নয়: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪১ পিএম

ফাইল ছবি
আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হলে কোনো নির্বাচন হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকারের প্রথম কাজ আওয়ামী লীগকে বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসা। রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত ‘জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদন : জুলাই হত্যাকাণ্ডের ব্যবচ্ছেদ, দায় ও বিচার’ শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার প্রশ্নে নীরব থাকলে মানুষ আবার রাজপথে নেমে আসবে। আমরা বলি না যে নির্বাচন হবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু না হলে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। যদি আওয়ামী লীগ ও খুনি হাসিনার কোনো সুরাহা না হয় এবং আমরা কোনো নির্বাচন করি, তাহলে সেই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে না। আওয়ামী লীগের বিচার, নতুন সংবিধান, গণপরিষদ ছাড়া আমরা এগোতে পারব না।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি আওয়ামী লীগের বিচারের প্রশ্নে কোনো ক্ষেত্রে ধীরগতি বা নীরবতা অবলম্বন করে, তাহলে হয়তো জনগণ রাজপথে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। সেই পরিস্থিতির দিকে যদি বাংলাদেশ যায়, তাহলে আমরা মনে করি, দেশে একটি গৃহযুদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ওনাদের ছয় মাস আগে কোনো কিছু বলা হলে সেটি ছয় মাস পরে দেখা যায়। যাদের চামড়া গন্ডারের মতো, তাদের বলব, চামড়াগুলো একটু পাতলা করুন। আপনারা যদি সচিবালয় বা অফিসগুলোকে কোনো দামি রিসোর্ট বা হোটেল মনে করেন, তাহলে ভুল করবেন।
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, যারা আইন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল জায়গায় আছেন তাদের বলব, জনতা আপনাদের যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেই দায়িত্ব পালনে আপনারা বাধ্য। এখানে অবাধ্য হওয়ার সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ দাবি করছে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি। আমরাও কেউ দাবি করছি না, প্রমাণ হয়েছে। এজন্যই আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথা বলছি। ৫ তারিখের পরও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও এখানে এসেছে। এগুলো নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, জাতিসংঘের মাধ্যমে জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ কর্মকাণ্ডের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর তোলপাড় হয়ে যাওয়ার কথা ছিল! কিন্তু ভাবনার বিষয় হলো, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো যতটা নির্বাচনমুখী আলাপে অভ্যস্ত, বিচার ও সংস্কারের প্রশ্নে তাদের অবস্থান ততটা শক্ত নয়।
বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, এটা যদি কোনো ডমেস্টিক বা অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন হতো, সেক্ষেত্রে কিন্তু পতিত আওয়ামী লীগ ভারতের সঙ্গে মিলে নানা কথাবার্তা বলত সেটাকে ডিসমিস করার জন্য। কিন্তু যখন জাতিসংঘের মতো একটা আন্তর্জাতিক বডি থেকে যেটা গোটা বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা রিপোর্ট বের হয়, সেটা কিন্তু উড়িয়ে ফেলাটা এত সহজ নয়।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন
করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া। সভায় আরও বক্তৃতা
করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ও বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের অ্যাডভোকেট
জহিরুল ইসলাম মুসা, অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর প্রমুখ।