কোন গোষ্ঠীকে সন্তুষ্ট করার জন্য এই সরকার আসেনি: মঈন খান

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
-67b4873f1a5fc.jpg)
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে সন্তুষ্ট করার জন্য কিন্তু এই সরকার আসেনি। এই সরকার কিন্তু একটি বিশাল দায়িত্ব নিয়ে এসেছে, সেই দায়িত্বটি কী? স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে বাংলাদেশকে রূপান্তর করতে হবে। এটা কিন্তু ছোটখাটো জিনিস নয়, আমি আনন্দিত তারা চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করেছেন। শুধু গ্রহণ করলে হবে না, দায়িত্বটি তাদের সঠিকভাবে পালন করতে হবে। এটা শুধু তাদের জন্য না, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ঢাকাস্থ মীরসরাই জাতীয়তাবাদী ফোরাম কর্তৃক 'গণঅভ্যুত্থান, গণপ্রত্যাশা এবং রাষ্ট্র সংস্কার' বিষয়ক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোন পক্ষপাতিত্ব করতে পারবে না। যে মুহূর্তে তারা (সরকার) পক্ষপাতিত্বে চলে যাবেন, তখনই তাদের কার্যপদ্ধতি ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমরা শুনেছি, ছাত্ররা নাকি এই সরকারকে এপয়েন্টমেন্ট দিয়েছে, আমরা জানি না, সারা দেশের মানুষ কী তাদের দায়িত্ব দেয়নি? ১৮ কোটি মানুষ কি দায়িত্ব দেয়নি? তারা কি একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে? সেই আন্দোলনে তো বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ গিয়েছিল।
তিনি বলেন, আমরা আবু সাইদকে দেখেছি, তোমরা গুলি কর, কিন্তু আমি প্রত্যয় থেকে সরব না। যে ছেলেটি আন্দোলনকারীদের পানি খাইয়েছে, তার কথা ভুলে গেলে কিন্তু চলবে না৷সব কিছু ভুলে গেলে কিন্তু চলবে না। রাজপথে যারা ছিল, যারা নিজেদের সাধারণ ছাত্র বলে পরিচয় দিয়েছিল। তাদের মধ্যে কি কেউ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো না? অবশ্যই ছিলো। যারা সত্যিকারের ছাত্র রাজপথে ছিলো, তারা কি কেউ বিএনপির সদস্য ছিলো না? এটা বুঝতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সত্যটা হলো, তারা সেদিনের প্রেক্ষিতে বিএনপি বলে নিজেদের পরিচয় দেয়নি, তারা পরিচয় দিয়েছিলো সাধারণ ছাত্র। এই সত্যগুলো বুঝতে না পারলে আমরা যে সংকটে আছি, সে সংকট থেকে কিন্তু বের হতে পারবো না।
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার কিন্তু এমন একটি জিনিস যেটা একবার করে ফেললাম, আর সবকিছু সুন্দর হয়ে গেলো, সেটাকে বুঝায় না। কারণ, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমি আজকে যেটি সংস্কার করলাম, সেটি কিন্তু আগামীকাল আবার সংস্কারের প্রয়োজন হতে পারে। কাজেই আমি সংস্কার করবো, তারপর আমি অন্যকিছু করবো, এটা কোন যুক্তিসঙ্গত কথা না। সংস্কার চলবে, মানুষের যে জীবনধারা সেটাও প্রবাহিত হবে, দেশ পরিচালনাও চলতে থাকবে।
মঈন খান বলেন, জনগণের প্রতি যদি আমাদের আস্থা থাকে, আমরা যদি সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে বর্তমান সমস্যা সমাধানের একটি মাত্র উপায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। যত দ্রুত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো ততই মঙ্গল। সংস্কারের কথা বলেন, ২০টি না কয়টি সংস্কার কমিশন করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের সংস্কার করা না পর্যন্ত কোন সংস্কার কাজে আসবে না।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, মুক্ত চিন্তা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম হায়দার প্রমুখ।