স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কোথায় ছিলেন, জামায়াতকে ফারুক

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩১ পিএম

জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, গত ৫৪ বছরে কোনোদিনও দেখিনি স্বাধীনতা দিবসে একটা মিছিল করতে। যখনই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অক্টোবর-নভেম্বরে একটি নির্বাচনের কথা বলা শুরু করলেন, তখনই আপনাদের মুখে রাম রাম। আবার শুনি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কিসের ইঙ্গিত? সংস্কারের পর নির্বাচন। কোথায় ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়? কোথায় ছিলেন ১৬ বছর?
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত ‘জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও পবিত্র মাহে রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি’ শীর্ষক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব প্রশ্ন রাখেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমরা শুনেছি আপনাদের একটা পত্রিকার মাধ্যমে ১৯৭১ সালে আমরা যারা যুদ্ধ করেছিলাম তাদেরকে অমুসলিম বলা হয়েছে। আবার নতুন চক্রান্ত শুরু করেছেন। কোথায় ছিলেন? আমার নেতা শহিদ প্রেসিডেন্ট যখন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য হাঁটু-জলে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছেন, যারা কবরস্থানের মধ্যে-জঙ্গলে ঘুমিয়ে জীবন কাটিয়েছেন, যারা আয়নাঘরে মানুষকে মারার শিক্ষা দিয়েছেন, তখন তো আপনাদের এতো জোরালো কথা বলতে দেখি নাই। এখন আবার এই ষড়যন্ত্র কেন। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি ১৬ বছর আমরা হাসিনার কাছে মাথা নত করি নাই। এখনো এই সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলে আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করবো না।
তিনি বলেন, এখন নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা শুরু হয়েছে। একটু যেন গোলমাল করে ফেলছে কেউ মনে হয়। একটা যেন কোথাও কিসের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। না হলে এই জামায়াতে ইসলামী-আওয়ামী লীগকে-শেখ হাসিনাকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে জীবন দিতে হয়েছে। আমি মনে করি, তার পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল শেখ হাসিনার।
ফারুক বলেন, জামায়াতে ইসলামী আপনারাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। পরিণামে আপনাদের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মেরেছে।
বিএনপির সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, বিগত ১৬টি বছরে আমরা অনেক কষ্ট করেছি, অনেক কটূক্তি শুনেছি, অনেক ব্যথা পেয়েছি, অনেক জেল-জুলুম সয়েছি। জনগণের কথা বলতে গিয়ে এই প্রেসক্লাবের সামনে থেকেই আমাদের নেতৃবৃন্দসহ গ্রেফতার হয়েছি।
আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ধ্বংস করে দিয়েছে উল্লেখ করে ফারুক বলেন, এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে আজকের ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশের মানুষ কস্মিনকালেও চায় নাই এবং ভাবতে পারে নাই যে, শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের গণতন্ত্র, বাংলাদেশের সংবিধানকে তার (শেখ হাসিনার) বাবা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেবে। এটা আমরা কখনোই শেখ মুজিবরের কাছে আশা করিনি। কিন্তু আজকে সেই কারণেই তাকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হলো। তার একমাত্র কারণ ছিল সংবিধান, গণতন্ত্র ও মানুষের ভালোবাসার সম্মান যে ব্যক্তি দিতে পারে না, সে ব্যক্তি কোনদিনও বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকতে পারে না। তার আরেক প্রমাণ শেখ হাসিনা।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক মো. নবী হোসেন প্রমুখ।