এ সরকারকে ব্যর্থ হতে দিতে চাই না: দুদু

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১৫ পিএম

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে এর অংশীদার আমাদেরও হতে হবে। সরকারের সমালোচনার কারণ হলো, তারা যাতে সফল হয়। এ সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে চাই না।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
দুদু বলেন, দেশে একটা ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়েছে। ফ্যাসিবাদের গ্রাস থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। এ ব্যাপারে যেসব ছাত্র-জনতা অকুণ্ঠ চিত্তে নিঃস্বার্থভাবে বুলেট বুকে ধারণ করেছে, জীবনকে উৎসর্গ করেছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের জন্য প্রার্থনা করি।
তিনি বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তনের পরেও বাংলাদেশের মানুষ আশায় বুকে বেঁধেছিল, তাদের জীবন ধারণের জন্য অন্তত পক্ষে গত সরকারের আমলের তুলনায় এবার অনেক ভালো থাকবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুরুতেই দ্রব্যমূল্য একটু কমের দিকে গেলেও পরবর্তীতে দাম বেড়ে যায়। মাঠ পর্যায়ের যে কৃষকরা সঠিক দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করেছে, সেটির ধারেকাছেও তারা যেতে পারেনি। এ দেশের কৃষক শ্রমিক সবসময় অবহেলিত থেকেছে এবং নিমর্মতার শিকার হয়েছে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বিএনপি গরিব মানুষের দল। বিএনপি খেটেখাওয়া মানুষের দল। কামার, কুমার, কুলি, মজুর ঠিক তেমনি মধ্যবিত্তের দল। সব শ্রেণীর মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে বিএনপি। সেই বিএনপি আজকে এ সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানালো, কিন্তু সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ৬ মাস চলে যাওয়ার পরেও ব্যর্থ হয়েছে বলে সবাই মনে করছে। এ সরকার বাজারদর এখনো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। দেশের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা শুরুতেই বলেছিলাম, সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেন। বর্তমান সরকার তার সমর্থনকে কাজে লাগানোর যে দক্ষতার দরকার ছিল, সেটা তারা করতে পারেনি। কিন্তু এ সরকারকে এখনো পর্যন্ত আমরা সমর্থন করি। এ সরকারের সমালোচনা করি সঠিক পথে থাকার জন্য। হয়তো তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে অসন্তুষ্ট হতে পারে, কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো ছাড়া কোনো পথ নেই।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, দেশের মধ্যে একধরনের নির্বাচনের আমেজ তৈরি হতে যাচ্ছে। সেই জায়গায় কিছু কিছু রাজনৈতিক দল প্রয়োজনীয় সংস্কার নয়, সংস্কার করে নির্বাচনের কথা বলছেন। বলতেই পারে! সব রাজনৈতিক দল তো স্বাধীন। সব রাজনৈতিক দলের নিজস্ব কর্মসূচি আছে। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
ছাত্রদলের নেতা দুদু বলেন, শয়তানকে সময়মতো শেষ করতে না পারলে, অর্থাৎ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যদি জনগণের মেন্ডেটপ্রাপ্ত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারি, তাহলে শয়তানরা তাদের ভূমিকায় আরও এগিয়ে যেতে পারে।
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির প্রমুখ।