Logo
Logo
×

রাজনীতি

কাউন্টার দখল নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষ, আহত ১৭

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী (বরগুনা)

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম

কাউন্টার দখল নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষ, আহত ১৭

বরগুনার আমতলী পৌরসভার বটতলা ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনিক পরিবহণ কাউন্টার দখলকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুবদল ও পৌর বিএনপির দুটি পক্ষের সংঘর্ষে ১৭ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ১১ জনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার দুপুরে আমতলী বাঁধঘাট চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় আমতলীতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

জানা গেছে, গত বছর ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর আমতলী পৌরসভার বটতলা ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনিক কাউন্টার দখল নিয়ে পৌর বিএনপির আহবায়ক কবির ফকির ও উপজেলা যুবদল যুগ্ম আহবায়ক সাবেক কাউন্সিলর সামসুল হক চৌকিদারের মধ্যে বিরোধ হয়।

সামসুল হক চৌকিদারের দাবি, ইউনিক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ তাকেই কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন। অন্যদিকে কবির ফকির দাবি করেন, ইউনিক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ দুজনে কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার দাবি করলেও ৪ মাস ধরে কবির ফকির এটি পরিচালনা করে আসছেন।

এ অবস্থায় গত ২৭ জানুয়ারি ইউনিক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ সামসুল হক চৌকিদারকে লিখিতভাবে কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব  দেয়। এরপর থেকে সামসুল হক চৌকিদার কাউন্টার বুঝে নিতে চাইলেও কবির ফকির তা দেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

শুক্রবার রাতে আমতলী থানায় এ কাউন্টার দখল নিয়ে বৈঠক হলেও কোনো সমাধান দিতে পারেনি থানা পুলিশ।

এর জেরে শনিবার সকালে সামসুল হক চৌকিদারের লোকজন কাউন্টার দখল করতে যায়। এ সময় কবির ফকিরের চাচাতো ভাই উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা (আহবায়ক) জালাল ফকিরের দুই ছেলে রাহাত ফকির ও ফরহাদ ফকিরের নেতৃত্বে তার লোকজন এসে বাধা দেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

এরপর দুপুরে এ নিয়ে সামসুল হক চৌকিদার ও কবির ফকিরের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে চৌরাস্তা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দু’পক্ষের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। আতংকে দোকানপাট বন্ধ করে দেন সবাই। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৭ জন আহত হয়। গুরুতর আহত রাহাত ফকির, ফরহাদ ফকির, আলী, সামসুল হক চৌকিদার, রেজাউল চৌকিদার, বেল্লাল চৌকিদার, আল আমিন, মিজানুর, শহিদ, বায়েজিদ ও মিল্টনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাপসাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর বটতলা বাসস্ট্যান্ডে দূরপাল্লার পরিবহণে যাত্রী ওঠানামা বন্ধ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শনিবার সকালে বটতলা ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনিক পরিবহণ কাউন্টারের তালা সামসুল হক চৌকিদারের লোকজন ভেঙে ফেলে। এ নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এর জেরে দুপুরে বাঁধঘাট চৌরাস্তায় কবির ফকিরের লোকজন সামসুল হক চৌকিদারের ওপর হামলা চালায়। পরে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে অনেকে আহত হয়েছেন। ঘটনার অনেক সময় পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এদিকে আমতলী উপজেলা ছাত্রদল আহবায়ক সোয়েব ইসলাম হেলাল বলেন, আমার ভাই বেল্লাল চৌকিদার কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাহাত ফকির ও ফরহাদ ফকিরসহ তার সহযোগীরা হামলা চালিয়ে ৮ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। একই সঙ্গে আমার ভাইকে কুপিয়ে জখম করেছে। 

আমতলী উপজেলা যুবদল যুগ্ম-আহবায়ক সামসুল হক চৌকিদার বলেন, ইউনিক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ গত ২৭ জানুয়ারি আমাকে লিখিত কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু কবির ফকির কাউন্টার জোরপূর্বক দখলে রেখেছেন। আমি এ বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করেছি। পুলিশ চেষ্টা করেও কবির ফকিরকে মানাতে পারেনি। শনিবার আমি কাউন্টারে গেলে কবির ফকিরের লোকজন আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। এতে আমিসহ ১০ জন আহত হয়েছে।

আমতলী পৌর বিএনপির আহবায়ক কবির ফকির বলেন, আমার কাউন্টার সামসুল হক চৌকিদার ও তার লোকজন দখলে করতে যায়। এ সময় আমার লোকজন বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সামসুল হক চৌকিদার ও তার লোকজন আমার দুই ভাইয়ের ছেলেসহ সাতজনকে কুপিয়ে জখম করেছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আহত ৭ জনকে চিকিৎসা দিয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আমতলী থানার ওসি আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম