ঢাবির প্রথম শহিদ নজিরের নামে কলাভবনের নামকরণ দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০২ পিএম
ছবি: যুগান্তর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহিদ নজির আহমদের নামে কলাভবনের নামকরণসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।
অন্য দাবিসমূহ
হলো-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রথম শহিদ হওয়ায় প্রশাসনিকভাবে ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী শহিদ নজির আহমদ দিবস’ পালন
এবং দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনে সরকারকে প্রস্তাব প্রদান ও ঔপনিবেশিক আমলে মুসলমানদের ওপর
পরিচালিত শোষণ-নির্যাতন-সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবিষয়ক অধ্যয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি
স্টাডি সেন্টার প্রতিষ্ঠা।
এসব দাবির প্রেক্ষিতে
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, আমরা ইতিহাসে ভূমিকা রাখা সবার সম্মান
ফিরিয়ে দিতে চাই। শহিদ নজির আহমদের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর
অ্যাসেম্বলিতে পর্যালোচনা করা হবে। ছাত্রদের দাবির যথার্থতা পাওয়া গেলে আমরা অবশ্যই
শহিদ নজির আহমদকে সম্মান জানাব।
রোববার শহিদ নজির আহমদের ৮২তম শাহাদাত বার্ষিকীকে ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দিবস’ হিসেবে পালনের দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকালে উপাচার্যের কাছে তার কার্যালয়ে স্মারকলিপি তুলে দেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।
এ সময় উপস্থিত
ছিলেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, যুগ্ম
আহ্বায়ক ইয়ামিন সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ
ও নিয়াজ আহমদ, সদস্য সচিব মুহিব মুশফিক খান, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক
আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে সকাল
৯টায় শহিদ নজিরের সমাধিস্থল আজিমপুর কবরস্থান জিয়ারত করে ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী শহিদ
নজির আহমদ দিবস’ এর কর্মসূচি শুরু করে সংগঠনটি।
এ সময় বিপ্লবী
ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক
প্রধান মো. শফিউর রহমান, যুগ্ম আহবায়ক রাবেয়া আকতার, সহকারী সদস্য সচিব ডা. মাসুম বিল্লাহ
ও সদস্য মো. মামুনুর রশীদ প্রমুখ যোগ দেন।
পরে বাদ যোহর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহিদ নজির আহমদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
দোয়া মাহফিল
পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র ইমাম ও খতিব ড. সৈয়দ
মুহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন। এসময় অতিথি হিসেবে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব
আবদুস সালাম ও সৌরভ শাকিল উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শহিদ
নজির ঔপনিবেশিক জামানায় তৎকালীন নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে ফেনী) আলিপুর গ্রামের একটি দরিদ্র মুসলিম পরিবারে
জন্মগ্রহণ করেন।
কিন্তু সেই
সময়েও দারিদ্র্যকে জয় করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্র
হিসেবে বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়ন করতেন। তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম ছাত্র
পরিষদের শীর্ষ নেতা ছিলেন।
১৯৪৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে (বর্তমান ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুরাতন ভবন) ক্লাস চলাকালীন মুসলমান ছাত্রদের ওপর কংগ্রেসপন্থি সাম্প্রদায়িক হিন্দু ছাত্ররা হামলা চালায়। তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে শহিদ নজিরকে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে শহিদ নজির আহমদ হত্যাকাণ্ড ছিল শিক্ষাঙ্গনের প্রথম সন্ত্রাসের ঘটনা।