খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ, বৈঠকের নেপথ্যে আলোচনা কী?
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম
![খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ, বৈঠকের নেপথ্যে আলোচনা কী?](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/01/03/ezgif-5-5e0e026a25-6777ae779e4c6.jpg)
বেগম খালেদা জিয়া ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ছবি: সংগৃহীত।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই দেখা করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এ সময় তার সঙ্গে স্ত্রীও ছিলেন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি থাকা খালেদা জিয়া ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরদিন মুক্তি পান।
অসুস্থতার কারণে বাসভবন ফিরোজার চার দেয়ালের মধ্যেই ‘বন্দি’ থাকতে হচ্ছে বর্ষীয়ান এই নেত্রীকে। এরমধ্যে কিছুদিন আগে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য বহুল প্রতীক্ষিত লন্ডন সফরের আগে সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এই সাক্ষাৎ রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষ তাৎপর্য তৈরি করেছে।
বিএনপি সূত্রে সংক্ষিপ্ত তথ্য সংবামাধ্যমে যা জানানো হয়েছে, সৌজন্য সাক্ষাতে সেনাপ্রধান খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছেন। এসময় তার সঙ্গে স্ত্রী বেগম সারাহনাজ কমলিকাও ছিলেন।
এই বৈঠকটি রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা সৃষ্টি করেছে। এছাড়া বৈঠকের নেপথ্যে কী ধরনের আলোচনার সূত্রপাত হতে পারে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষত, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবিদাওয়া প্রতিদিনই ঢাকার রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এরইমধ্যে ঢাকার এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে আগামী নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন সেনাপ্রধান।
এছাড়া ২০০১ সালে জোট সরকার গঠন এবং পরবর্তী ১৫ বছরে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বাড়ছে। প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগ, সংবিধান পরিবর্তন ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গেও বিবাদের জায়গা তৈরি হচ্ছে। এ নিয়ে আগামী নির্বাচনের আগে বহুমাত্রিক নাটকীয়তা যে অপেক্ষা করছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এরমধ্যে লন্ডনে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দেশে ফিরেননি। রাজনৈতিক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমানের আরও মামলা এখনও রয়ে গেছে।
তবে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো, ‘বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ প্রশংসার জন্ম দিয়েছে। সামাজিমাধ্যম থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলে সেনাপ্রধানের এই উদ্যোগ ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সবাই।
সালেহ আহমদ নামে একজন ইউটিউবে লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ মাননীয় সেনাপ্রধান আপনার প্রতি বাংলাদেশের জনগণ কৃতজ্ঞ থাকবে’।
মিজান বেপারি নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, এই দেখা করাটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে। স্যালুট দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে’।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৮তম সেনাপ্রধান হিসেবে ২৩ জুন ২০২৪ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার তীব্র প্রাণঘাতি সরকারবিরোধী আন্দোলনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা সাধারণের জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা ও আলোচনার জন্ম দেয়।
বিএনপি সূত্র অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট দীর্ঘ আলোচনায় বসেছিলেন। বৈঠকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে সেনাপ্রধান তার রোগমুক্তির জন্য দোয়া এবং দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। পাশাপাশি বৈঠকে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফজলে এলাহি আকবর উপস্থিত ছিলেন।