সংস্কার পাশ কাটিয়ে হাসিনার পথ অনুসরণ করছে সরকার: আসাদুজ্জামান রিপন
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ পিএম
![সংস্কার পাশ কাটিয়ে হাসিনার পথ অনুসরণ করছে সরকার: আসাদুজ্জামান রিপন](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/12/25/Untitled-11-676c3358c1653.jpg)
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বলেছেন, আমরা দেখতে পেয়েছি- সংস্কারের কথা বলে সরকার সংস্কারের প্রক্রিয়া পাশ কাটিয়ে শেখ হাসিনার পথ অনুসরণ করছে। তারা বিচারক নিয়োগ করছেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে লোক নিয়োগ করেছেন। এগুলো সবই হচ্ছে হাসিনার পরিত্যক্ত মডেল।
তিনি বলেন, এ সরকার কতটুকু সংস্কার করতে চায়, সেটা আমরা জানি না; কিন্তু সংস্কারের নামে বছরের পর বছর তারা যদি ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে চায়, এটা বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জিয়া শিশু-কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত বিএনপির সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাবেক আহবায়ক মরহুম জাহিদ হোসেন চুন্নর ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সরকার সংস্কারের কথা বলে; কিন্তু সরকার ইতোমধ্যে সংস্কারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ মিস করেছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করার ক্ষেত্রে সংস্কারের যে উদ্যোগ, সেটা তারা ভুল করেছে। নির্বাচনের কোনো তারিখ দেননি, কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠন করে বসলেন। অথচ নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত কোনো সংস্কারের রিপোর্টই আসেনি।
দ্বিতীয়ত, ৩১ তারিখ দুর্নীতি দমন কমিশন নিয়ে আলোচনা হওয়ার প্রথম রিপোর্ট পেশ করার কথা ছিল; কিন্তু রিপোর্ট পেশ করার আগে সরকার দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করে বসলেন।
তৃতীয়ত, বিচার বিভাগে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগ করে বসলেন।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, শেখ হাসিনা যে পদ্ধতিতে বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন, ঠিক সেভাবেই এই সরকার বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা চেয়েছিলাম সরকার সংস্কারের মধ্য দিয়ে বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া তৈরি হবে; কিন্তু সরকার সেটি করেনি। সরকার মুখে সংস্কারের কথা বলছেন, কিন্তু দৃশ্যমানভাবে সরকারের তরফ থেকে সংস্কারের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পাইনি।
তিনি বলেন, ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বলতম সরকার হচ্ছে বর্তমান এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একটা দুর্বল সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। এগুলো ঠিক করার জন্য একটি নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের সব সংকটের কারণ হলো নির্বাচন।
তিনি বলেন, আমাদের সংকট এখনো শেষ হয়নি। ভীষণ একটা সংকটের মধ্যে আমরা আছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান বারবার বলেছেন- ‘আগামী নির্বাচন কঠিন হবে এবং বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মানুষের কাছে যেতে হবে এবং জনআস্থা অর্জন করতে হবে।’ এছাড়া আমাদের আরেকটা কথা বলেছেন, সেটি হলো- ‘৫ আগস্টের আগের রাজনীতি এবং ৫ আগস্টের পরের রাজনীতি এক নয়।’ সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
জাহিদ হোসেন চুন্নুর স্মৃতিচারণ করে ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, জাহিদ হোসেন চুন্নু ৮০-এর দশকে ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত না থেকেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাসাসের সঙ্গে যুক্ত থেকে পুরো আন্দোলনেই আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি খুবই সক্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য ছিলেন। তার অস্বাভাবিক মৃত্যু আমাদের পার্টিকে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
জিয়া শিশু-কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তৃতা করেন।