Logo
Logo
×

রাজনীতি

হাসিনাকে দিল্লি ছাড়া দুনিয়ার কেউ সমর্থন করেনি: রিজভী

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৪ পিএম

হাসিনাকে দিল্লি ছাড়া দুনিয়ার কেউ সমর্থন করেনি: রিজভী

বিগত ১৬ বছরে একমাত্র দিল্লি ছাড়া শেখ হাসিনাকে দুনিয়ার কোনো দেশ সমর্থন করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অবজ্ঞা করেছেন। প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি অহংকার করে নিজেদের প্রভু মনে করে। তা না হলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ১৬ ডিসেম্বর কিভাবে বললেন- ১৬ ডিসেম্বর হচ্ছে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়। তিনি তো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে, বাংলাদেশের স্বাধীন ভূখণ্ডকে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট করলেন, অবজ্ঞা করলেন।

বুধবার সকালে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির সামনে ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, যুদ্ধ করেছে বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা। লুঙ্গি কষে বেঁধে নদী-নালা, খাল-বিল, জঙ্গল থেকে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করেছেন। আপনারা (ভারত) বন্ধুর ভূমিকা পালন করেছেন। তাহলে এটা বাংলাদেশের বিজয় দিবস না হয়ে ভারতের বিজয় দিবস হয় কী করে? তার মানে উনারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে অবজ্ঞা করতে চান। আমাদের যে ৩০ লাখ মানুষ অকাতরে জীবন দিলেন, সেটিকে তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে চান। 

তিনি বলেন, আমেরিকা যখন যুদ্ধ করছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে, তখন ফ্রান্স আমেরিকাকে সাহায্য করেছিল সেই ১৭৭৬ থেকে ১৭৮১ সালে তাদের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত। কই ফ্রান্স তো বলে না এটা তাদের বিজয় দিবস। আমেরিকানরা পালন করে তাদের বিজয় দিবস, তাদের স্বাধীনতা দিবস।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, গোটা বিশ্ববাসী জানে বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা তাদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে। ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিল। ওইসব জীবনের কি কোনো মূল্য নেই মোদি বাবু? 

নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশ্যে রিজভী আরও বলেন, আপনি বলছেন- এটা আপনাদের বিজয় দিবস, এটা ভারতের বিজয় দিবস। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কর্নেল এমএজি ওসমানী সাহেব একটি কথা বলেছিলেন, ভারত যদি আমাদের সহযোগিতা নাও করত তারপরও বাংলাদেশ স্বাধীন হতো। কারণ একটা তেজস্বী অদম্য সাহসী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত যখন কোনো রাজনীতিবিদ নিতে পারেননি। সেই সময়ে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে একজন তরুণ মেজর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে যে তরঙ্গ সৃষ্টি করেছিলেন, সেই তরঙ্গে অন্যান্য সেনা অফিসার, বাংলাদেশের আমজনতা উদ্বুদ্ধ হন। তারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, আজকে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, মতিউর রহমান, হামিদুর রহমান- এই যে বীরশ্রেষ্ঠরা, তারা কিসের জন্য জীবন দিয়েছেন? ওরা কি ভারতের বিজয়ের জন্য জীবন দিয়েছে? নাকি তাদের নিজের দেশ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটা স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য তারা যুদ্ধ করেছে?

এ সময় ভারত সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আমি দিল্লির নীতি-নির্ধারকদের উদ্দেশে বলতে চাই- আপনারা যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করেন তাহলে ভারত থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এত অপপ্রচার কেন? শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, এই মনঃকষ্টে আপনারা অসংখ্য মিডিয়ায় প্রতিদিন বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য রাখছেন। 

বিএনপি মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশে একটি পরিবর্তন হয়েছে; এই পরিবর্তন ১৬-১৭ বছরের নিরন্তর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া, তাকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে।

ভারতের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আপনারা সমস্ত শিষ্টাচার, রাষ্ট্রাচার, সমস্ত কূটনীতিকে উপেক্ষা করে আপনাদের পররাষ্ট্র দপ্তর ও আপনাদের অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা প্রতিদিন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আজেবাজে কথা, মিথ্যা কথা, অপপ্রচার, অপতথ্য দিয়ে এক ধরনের ভিন্ন পরিবেশ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। কিন্তু সারা দুনিয়ার মানুষ জানে বাংলাদেশ কত সম্প্রীতির দেশ, কত শান্তির দেশ। যারা আমাদের ঘৃণা করে, যারা আমাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে তাদের বলে রাখি- এই বিষোদগার যতদিন করবেন আমাদের প্রতিবাদ এবং আমাদের যে রাজনৈতিক প্রতিরোধ আমরা করে যাব। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদ আওয়াল প্রমুখ।

ঘটনাপ্রবাহ: মহান বিজয় দিবস


আরও পড়ুন

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম