Logo
Logo
×

রাজনীতি

আওয়ামী লীগ দেশকে ফোকলা বানিয়ে দিয়ে গেছে: সাকি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম

আওয়ামী লীগ দেশকে ফোকলা বানিয়ে দিয়ে গেছে: সাকি

‘আওয়ামী লীগ দেশকে ফোকলা বানিয়ে দিয়ে গেছে। অর্থনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্য, মানুষের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সংগতি নেই। খেটে খাওয়া মানুষ বিপদে আছে।’

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় যাদুঘরের সামনে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত ‘ভাসানীর পথ ধরে জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হোন’ শীর্ষক সমাবেশে এসব বলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। 

তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধান করা আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকারের) দ্বায়িত্ব। তিন মাস হয়ে গেছে, মানুষ আর বেশিদিন আপনাদের সময় দেবে না। অবিলম্বে মানুষ তাদের সমস্যার সমাধান চায়। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। দ্রব্যমূল্য কমান, অর্থনৈতিক চ্যলেঞ্জ মোকাবিলা করেন। 

বাংলাদেশে কোনোভাবেই যেন ফ্যসিবাদের পুনরুত্থান না ঘটে, তার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে আর কোনোভাবেই ফ্যসিবাদের পুনরুত্থান চাই না। এজন্য ছাত্র, শ্রমিক, জনতার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতেই হবে। তার জন্য আমাদের ঐক্য দরকার। আমরা যদি জনগণের স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করতে চাই, আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে দেখতে না চাই তাহলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

সাকি বলেন, বিদেশি শক্তিকে ভুল বুঝিয়ে, আবারও ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। ট্রাম্পের পোস্টার নিয়ে মিছিল করে ক্ষমতায় ফেরা যাবে না। ফ্যাসিবাদকে বাংলার জনগণ আর কখনও মেনে নেবে না। দেশে যাতে আর কখনও ফ্যাসিস্টরা ফিরে আসতে না পারে; তার জন্য নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ওপর গুরুত্বারোপও করেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে সাকি বলেন, ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে এখনো ষড়যন্ত্র করছে। যার অধীনে (পাশ্ববর্তী দেশ) স্বৈরাচারী শাসন চালিয়েছে, তারাও চায় যে কোনোভাবে এ দেশের ক্ষমতা যাতে তাদের হাতে থাকে। এ কারণে আমরা আপনাদের বলি অভ্যুথ্যানের রাজনৈতিক শক্তি সংহত করতে হবে। অভ্যুথান যদি সফল করতে হয়, যে অভ্যুথান এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ, নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণ তবে তার শক্তি আপনাদের সংহত করতে হবে। আমরা গণসংহতি আন্দোলন বাংলাদেশের জনগণের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য, দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের জন্য আমরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। 

তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সংবিধান, রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার একটা নতুন বন্দোবস্ত এবং গণতন্ত্রের ভিত্তিতে নির্বাচন ও তার জন্য লড়াই করতে হবে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। মাওলানা ভাসানীর দেখানো পথ অনুসরণ করি। এই দেশের খেটে খাওয়া মানুষ শ্রমিকেরা তাকিয়ে দেখুক শহিদের তালিকা। ১৬০০ এর ওপরে ছাত্র শ্রমিক শহিদ হয়েছেন। ৫০০ এর উপরে চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। ৫০ হাজারের উপরে আহত। শহিদদের বেশিরভাগ শ্রমজীবী মানুষ। এ দেশের শ্রমিক খেটে খাওয়া মানুষদের মুক্তি না আসলে, জনগণের হাতে ক্ষমতা না থাকলে আর ক্ষমতা পাবে না। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা না করলে কোনো সংবিধান গণতান্ত্রিক হতে পারে না। আর সেই কারণেই সমস্ত রাষ্ট্র নির্মাণ জনগণের ইচ্ছার ওপরে করতে হবে। যে ঐক্যে ৫ আগষ্ট সৃষ্টি হয়েছে সেই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের আগামী দিনের রাষ্ট্র নির্মাণ, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, গণতান্ত্রিক সংবিধান ও তার ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথে গণসংহতি আন্দোলন লড়াই করবে। সেই লড়াইকে শক্তিশালী করার আহ্বান আমরা জানাই। আজকে বাংলাদেশের মানুষ এই সংগ্রামের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। এই রাষ্ট্র নির্মাণ তারা দেখতে চায়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের ওপর আপনারা দাঁড়িয়ে আছেন, রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। তিন মাস পার হয়েছে এখন পর্যন্ত জানমালের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এইভাবে চলতে পারে না। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যারা আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে, গুম খুন লুটপাট করেছে এদেরকে গ্রেফতার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। 

আগামী নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়ে সাকি বলেন, সমস্ত রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, শ্রেণি পেশার অংশীজনদের নিয়ে একসঙ্গে বসে, রাষ্ট্রের রূপান্তর, সংস্কার, নতুন বন্দোবস্ত আর আগামী দিনের নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। এটাই এখন বাংলাদেশের মানুষ চায়। মানুষের চাওয়া অনুযায়ী আপনাদের চলতে হবে। 

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু, তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমি, মনির উদ্দীন পাপ্পু এবং সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুইয়া, ফাল্গুনী সরকার, জুলহাসনাইন বাবু, মুরাদ মোর্শেদ, দীপক রায়, দীপক রায়, তরিকুল সুজন ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অঞ্জন দাস, সৈকত মল্লিক এবং নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিত চন্দ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম