সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে ৬ জেলার নেতাকে দেওয়া চিঠির প্রসঙ্গ টেনে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, বিএনপি যে চিঠি দিয়েছে, সেই বিষয়ে একমাত্র তারাই বলতে পারবে। চিঠির বিষয়ে আমাদের সঙ্গে পূর্ব আলোচনা ছিল না। আগামীতে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হলে আমাদের দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
চিঠির প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, ওই চিঠি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে সমস্ত মন্তব্য করা হচ্ছে, তা দ্রুত বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। তার ভাষায় (রাশেদ) যুগপৎ আন্দোলন যারা করেছে তাদের একটি ঘোষণা রয়েছে। ওই ঘোষণায় ৩১টি দফা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে জাতীয় সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছে। আমরা বিভক্ত হয়ে গেলে কেউ রক্ষা পাব না।
ঝিনাইদহ শহরে একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
তিনি আরও বলেছেন, বিপ্লব এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বিপ্লবের অনেক বাকি। আমাদেরকে বিপ্লব শেষ করতেই হবে। আমরা বলেছি যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব এবং আমরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার পক্ষে।
রাশেদ খান বলেন, সুতরাং আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার সমালোচনা বন্ধ করি। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে এলাকায় কে মেয়র হবে কে এমপি কে মন্ত্রী হবে। জনগণের সেই ক্ষমতা আমাদের দিতে হবে। গণঅধিকার পরিষদ জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করে। আমরা সংখ্যা অনুপাতিক নির্বাচনের কথা বলেছি। খুব শিগগিরই রাষ্ট্র সংস্কারের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বর্তমান সরকার প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে রাশেদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কারণ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা যেভাবে দলীয়করণ, আত্মীয়করণ, রাজনীতি ফ্যাসিজম তৈরি করে তা খুব সহজে অল্প সময়ের মধ্যে দূর করা সম্ভবপর হবে না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে। তাদের নানানভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। তারা এখনো ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে। যারা বাজার দখল করেছেন, যারা টার্মিনাল দখল করেছেন, যারা ঘুস দুর্নীতি রাহাজানি অত্যাচার করেছে, যারা সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকতা ও টাকার বিনিময়ে লালন পালন করেছে। তারা এখনো পর্যন্ত বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত মামলা হয়নি। অভিযোগ আসছে অর্থের বিনিময়ে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং কাজ করতে পারি তাহলে সকল সমস্যা দূর করা সম্ভব এবং এই সরকারের পক্ষে রাষ্ট্র সংস্কার করা সম্ভব হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে গণঅধিকার পরিষদ সম্পাদক বলেন, আমরা সরকারের প্রতি দাবি রেখেছি একটি রোড ম্যাপ জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। আমরা এই সরকারকে রাষ্ট্র সংস্কারে পর্যাপ্ত সময় দিতে চাই। সরকারে উপদেষ্টাদের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, আগে রাষ্ট্র সংস্কার এরপরে নির্বাচন। রাষ্ট্র সংস্কার না হলে জাতীয় ঐক্য সংহতি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। যে লাউ সেই কদু, জনগণের ভাগ্যর পরিবর্তন হবে না।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, ঢাকা উত্তরের সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন রাজন, মিডিয়া সেলের আহবায়ক মিশন হোসেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি মো. আল মামুনসহ অনেকে।