জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক
রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে যে সিদ্ধান্ত নিল বিএনপি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০০ পিএম
রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত বদলায়নি বিএনপি। বরং সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক কোনো সংকট যাতে সৃষ্টি না হয় সেই ব্যাপারে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বোঝাপাড়া করে চলবে দলটি। অল্প সময়ে নির্বাচন কেন্দ্রিক সংস্কার কাজ শেষ করে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেবে এমন প্রত্যাশা বিএনপির।
সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের নীতিনির্ধারকরা এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভায় যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানের মুখে পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেন ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা। সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই'। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হলেও সতর্কতার সঙ্গে বিএনপি রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইসু্যর সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করেনি। রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইসু্যতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি সোচ্চার অবস্থানে রয়েছে। তাদের এই দাবির সঙ্গে একমত নয় বিএনপি। তবে, এই ইসু্যতে যাতে ছাত্রদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি না হয়, সেদিকে দৃষ্টি থাকবে দলটির।
জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি অপসারণ করা হলে দেশে একটা সাংবিধানিক সংকট দেখা দিতে পারে। এই সুযোগ নিতে পারে ফ্যাসিস্ট হাসিনা। আমরা তো সেটা হতে দিতে পারি না।
স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্র মেরামতে ঘোষিত সংস্কার কর্মসূচি এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দাবির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। নীতিনির্ধারকরা গত ৫ আগস্টের গণ-অভু্যত্থানের পর রাষ্ট্রে নতুন করে কোনো ধরনের সংকট বা জটিলতায় পড়ুক এমন পরিস্থিতি সতর্কভাবে এড়িয়ে চলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। বিশেষ করে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ প্রশ্নে। বৈঠকে এক নেতা বলেন, রাষ্ট্রপতির ইসু্যতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিএনপির কাছে কোনো মতামত চায়নি। ছাত্রদের কথায় বিএনপিকে সাড়া দিতে হবে কেন প্রশ্ন করেন ওই নেতা।
সূত্র জানায়, বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশে্লষণ ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন নীতিনির্ধারকরা। সবার মতামতের ভিত্তিতে বিএনপি আগামী মাসে রাজধানী ঢাকাসহ জেলা ও মহানগরে নতুন করে কর্মসূচি শুরু করবে। রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি সামনে রেখে এই কর্মসূচি শুরু করবে দলটি।
সূত্র জানায়, এসব কর্মসূচির মধ্যে এবার ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস' জাঁককমকভাবে পালন করা হবে। এ উপলক্ষ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে জেলা ও মহানগরে ১০ দিনের কর্মসূচি থাকবে। ঢাকায় বড় আকারে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা হবে। ৭ নভেম্বর কেন্দ্রিক কর্মসূচির পর অবস্থা বুঝে সাংগঠনিক কর্মসূচির গতি বাড়ানো-কমানো হবে। বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় হঠাত্ বন্যার কারণে রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। এখন আবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।