Logo
Logo
×

রাজনীতি

আলোচনা সভায় বিভিন্ন দলের নেতারা

ছাত্রদের দাবিতে সরকারের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না পরিষ্কার করতে হবে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৩ পিএম

ছাত্রদের দাবিতে সরকারের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না পরিষ্কার করতে হবে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন নতুন দাবির প্রতি সরকারেরও সমর্থন আছে কি না, এই প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। কেননা ছাত্র প্রতিনিধিরা সরকারেও আছেন। 

এক আলোচনা সভায় রাজনৈতিক দলের নেতারা এ কথা বলেন। তারা আরও বলেন, কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে অর্জন বিসর্জনে পরিণত হতে পারে। সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৮০ দিন : গতিমুখ ও চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন তারা।

আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সিলেক্টিভ (বাছাইকৃত) নয়, জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কার করার আহ্বান জানিয়েছেন। যেখানে ঐকমত্য হবে, সেখানে সংস্কার করতে হবে। 

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য ১০টি কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ৯০ দিনের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবে। কিন্তু এরই মধ্যে ছাত্ররা নতুন নতুন দাবি উত্থাপন করা হচ্ছে। এ দাবির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার বা কমিশনের কোনো সমর্থন বা সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা আমরা জানি না। এ জিনিসগুলো পরিষ্কার করতে হবে। কারণ, এ দাবিগুলো সংস্কারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমির খসরু বলেন, জাতীয় স্বার্থে সবাইকে প্রতিটি বিষয়ে ঐকমত্যে বিশ্বাসী হতে হবে। বিশেষ করে নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই।

আমির খসরু বলেন, বিগত ১৬ বছরের বহু লোক জীবন দিয়েছেন, চাকরি হারিয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকারিভাবে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদীদের দোসররা ফিরে আসার জন্য ঘোরাঘুরি করছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে। বাংলাদেশের নাগরিক মনোজগতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। সবার মধ্যে আশা-আকাক্সক্ষা জেগেছে। একটা ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণ করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রায় ৬ বছর আগে ‘ভিশন ২০৩০’-এ খালেদা জিয়া সংস্কারের কথা বলেছেন। বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা দিয়েছে। আলোচনা সভা, সেমিনার, লিফলেট বিতরণ করছে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আজকের প্রেক্ষাপটে কী মৌলিক সংস্কার করব, কীভাবে করব, সেই প্রশ্ন আসছে। যেসব সংস্কার জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে হবে, সেগুলো করতে পারে। যে সংস্কারে জনগণ ঐকমত্য হবে না, সব রাজনৈতিক দল একমত হবে না, সেগুলো পরবর্তী সরকারের জন্য রেখে দিতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, গত ১৬ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি বলেই শেখ হাসিনার মতো দানবীয় শক্তির উত্থান হয়েছে। জনগণের সবচেয়ে বড় ঐক্য তারা ভোট দিতে চায়। ৩৫ বছরের নিচে কেউ এখনো ভোট দিতে পারেননি।

আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা সংস্কার করা, তা করে নির্বাচন দেওয়া। এজন্য নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কারকাজে তাদের জোর দেওয়া উচিত। এখন পর্যন্ত প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সংস্কার করতে পারেনি এ সরকার। 

সভার শুরুতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের ৮০ দিনের ওপর ১০টি পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারসহ বেশকিছু ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য রয়েছে; কিন্তু নিত্যপণ্যের বাজার, জননিরাপত্তা, প্রশাসনসহ নানাক্ষেত্রে এখনো স্বস্তি আসেনি। 

তিনি বলেন, বিশেষ মহলের নানা এজেন্ডার চাপে সরকারকে পথ হারালে চলবে না। সরকারের নিরপেক্ষতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয় এমন কিছু করা যাবে না। নতুন নতুন ইস্যুর ভিড়ে সংস্কার এজেন্ডা এখন পেছনে পড়ে গেছে। ঐকমত্যের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক অগ্রাধিকার ঘোষণা করার আহ্বান জানান তিনি।

 সাইফুল হক বলেন, কাউকে নিষিদ্ধ করা সংকটের সমাধান নয়। বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সমাজে রাজনৈতিক বৈরী প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করা প্রয়োজন। 

আকবর খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী সৈয়দ এহসানুল হুদা, এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্মসাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহ্বায়ক শেখ আবদুন নূর প্রমুখ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম