রাজনীতি বাইরে যে সংস্কার সেটা কল্পনার সংস্কার: গয়েশ্বর চন্দ্র
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২২ পিএম
রাজনীতির বাইরে সে সংস্কার আসে সেটা কল্পনার সংস্কার, সেই সংস্কার বাস্তবতার সাথে অনেক অমিল থাকে, এই কারণে রাজনৈতিক সমস্যা রাজনীতিবিদরা সমাধান করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের পরিচিত সভায় তিনি এই কথা বলেন।
দলটির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৭ দফা রাষ্ট্র কর্মসূচি জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। আমরা যখন যুগপৎ আন্দোলন করলাম তখন সকল দলের মতামতের ভিত্তিতে সেটাকে আরো পরিমার্জিত করে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরেছি। সেটা এই সরকার পতনের আগে যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। সুতরাং নতুন সংস্কারের গীতিকারের প্রয়োজন নাই।
সংস্কার কার্যক্রম মাসের পর মাস প্রয়োজন নেই জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সেই ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবে কমপক্ষে ৪০ টি দল একমত হয়ে আমরা জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিলাম। আপনারা সেই ৩১ দফা নেন। সেখানে যদি কিছু পরিমার্জিত করা লাগে সেটা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করেন। এই সংস্কারের জন্য মাসের পর মাস প্রয়োজন হয় না।
রাজনৈতিক সমস্যা রাজনীতিবিদরা সমাধান করে জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনীতির বাইরে সে সংস্কার আসে সেটা কল্পনার সংস্কার সেই সংস্কার বাস্তবতার সাথে অনেক অমিল থাকে। এই কারণে রাজনৈতিক সমস্যা রাজনীতিবিধরা সমাধান করে। যেহেতু আমরা সবাই একমত হয়েছি একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন আমরা সে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি সেগুলো আপনারা দেখেন। আপনারা যারা দায়িত্ব পেয়েছেন একসাথে বসেন দেখেন কোনটা শব্দ ভুল কোনটা বানান ভুল। তারপর জাতির সামনে সংস্কার প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরেন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নারীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য একটি শক্তিশালী ফোরাম প্রয়োজন। এই ফোরাম কোন দলীয় ফোরাম। এটি স্বতন্ত্র একটি নারী ও শিশু সংগঠন।
গয়েশ্বর রায় বলেন, দীর্ঘদিন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন খালেদা জিয়া। নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে সময় লাগছে কিন্তু চূড়ান্ত বিজয়ে তিনি জয়ী লাভ করছেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একটা দল নিষিদ্ধ হয়েছে তাদের তো গ্রেফতার হচ্ছেনা। সবাই তো আরাম আয়েশে ঘোরাফেরা করছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের পরে জাহাঙ্গীর কবির নানক ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দিয়েছে এই বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচার কতটুকু যৌক্তিক?
দেশে মাথাপিছু আয়ের মাথাপিছু ঋণ বেশি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার বছরের পর লাখ লাখ কোটি টাকা বাজেট দিয়ে ১৫ বছরে মাত্র ১৮ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। এই টাকা দেশে আনা প্রয়োজন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যেমন মুকুট দিয়েছি সেটা খুলতে চায়না সম্মান দিতে চায়। কিন্তু আপনারা এটা ভাববেন না কয়েকজন ছাত্র আপনাদের সরকারে বসিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক সেলিমা রহমান বলেন, তারেক রহমান বলেছেন দেশে নারী ও শিশুরা যেভাবে নির্যাতিত হচ্ছে তাদের রক্ষায় একটি কমিটি করেন। তার ধারাবাহিকতায় আমরা কমিটি করে যেখানে নারী নির্যাতন হয়েছে সেখানে আমরা দাঁড়িয়েছি।
সেলিমা রহমান বলেন, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কেন ধানের শীষে ভোট দিয়ে তাকে ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকেরা নির্যাতন করেছে। ছাত্রজনতার আন্দোলনে দেখেছেন কীভাবে নারী ও শিশুদের হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করেছে। স্বৈরাচার পতন হয়েছে কিন্তু নারীরা এখনো মুক্ত হয়নি।
বিএনপির এই নারীনেত্রী বলেন, বাংলাদেশ যে মূল্যবোধে স্বাধীন হয়েছে সেই মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা দেশের সব সামাজিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে নিজেদের মত করে আলাদা পৈশাচিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে দুটি শক্তি একটি নারী শক্তি একটি পরুষ শক্তি। আমাদের লড়াই হবে অধিকার ফিরিয়ে আনার অধিকার। বৈষম্য দূর অধিকার।
পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, দলটির যুগ্ম সম্পাদক এ্যাড আব্দুস সালাম আজাদ, দলটির সেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরফত আলূ সপু, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী।