কারাগারে পিন্টুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে: গয়েশ্বর
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৯ পিএম
আলোচনা সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
বিএনপির সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুকে কারাগারে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘শহিদ নাসিরউদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি করেন।
‘রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে জালিম খুনি হাসিনা সরকার কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার শহিদ নাসির উদ্দিন পিন্টুসহ সকল শহিদের হত্যার বিচার চাই, করতে হবে’ এই সভা হয়। এই সভায় নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনার সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ২ জুন হাইকোর্টের গেট থেকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পিন্টুকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২০১৫ সালের ৩ মে রাজশাহী কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘জাতীর জন্য নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু নিজের জীবন দিয়েছেন। সে অনেক সাহসী ছিল। পরিকল্পিতভাবে পিন্টুকে হত্যা করা হয়েছে। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য পিন্টু জীবন দিয়েছেন। পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ড হলো একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের মূল হচ্ছে শেখ হাসিনা। আমরা পিন্টুর হত্যার বিচার চাই। সরকার এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার করবেন এবং যারা হত্যা করেছে, তাদের জনসম্মুখে নিয়ে আসবেন বলে আশা করছি।’
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আরো বলেন, আজকে শেখ হাসিনাকে যারা পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে তারা জাতির সাথে ভালো কিছু করেনি। যারা শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে; তাদের ব্যাপারে জাতি একদিন জানতে চাইবে। কিন্তু, এখন হয়তো আপাতত জাতি কিছু বলছেন না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, জনগণ আপনাদের সাথে আছে। জনগণ তো আপনাদেরকে সহযোগিতা করছে। কিন্তু জনগণের ন্যায্য পাওনা তাদের ভোটাধিকার কবে দিবেন- এটা বলতে আপনাদের দ্বিধা কেন? কী কারণে, আপনারা এটা নিয়ে বিব্রত? কী নির্বাচনী সংস্কার করবেন? কাকে নিয়ে সংস্কার করবেন? কুসংস্কার আচ্ছন্ন যেসব লোক রয়েছে, তাদেরকে নিয়ে আপনি সংস্কার করবেন। আর সে সংস্কার কী হবে? সংস্কার করতে হলে আপনাকে রাজনীতিবিদদের পরামর্শ নিতে হবে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জানা-অজানা হাজারো মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে শুধুমাত্র একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে; অন্যকিছুর জন্য বসানো হয়নি। নির্বাচনটা সঠিকভাবে হওয়ার দিকে নজর দেন। সে নির্বাচনে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে আপনাদের সমস্যা কোথায়? অন্য কেউ ক্ষমতায় আসলেও সমস্যা কোথায়? আপনাদের ঘাড়ে চেপে বসে আছে শেখ হাসিনার পরিত্যক্ত সকল আমলা, প্রেতাত্মারা। তারা দেশ চালাচ্ছে আর আপনারা সংস্কারের গল্প শুনিয়ে শুনিয়ে মানুষের দৃষ্টি ভঙ্গিকে অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মাদের পরিষ্কার করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান গয়েশ্বর।