ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপিতে শিগগিরই নতুন কমিটি, আলোচনায় যারা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম
বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর শিগগিরই নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে। কারা থাকছেন নতুন এই কমিটিতে তা নিশ্চিত করে দলের কেউই বলতে পারছে না। তবে আলোচনায় আছেন দলের অনেক নেতাই। ক্লিন ইমেজ ও জনপ্রিয়তা যাচাই করে এবার শীর্ষ পদে নেতাদের আনতে চান দলটির হাইকমান্ড।
বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই, দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয় এমন নেতাদের নেতৃত্বে আনতে কাজ করছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যেকোন সময় এই কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে দলটির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে হঠাৎ করে কোনো কারণ উল্লেখ না করে আড়াই মাসের ব্যবধানে সাইফুল আলম নিরব ও আমিনুল হকের নেতৃত্বাধীন দলের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যুগান্তরকে বলেন, শিগগির ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তরের নতুন কমিটিতে স্থান পেতে বেশ লবিং-তদবির শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। এই অবস্থায় দলের সিনিয়র নেতারা কেউ কেউ বলছেন, যারা আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন, মামলা-হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, জেল খেটেছেন তাদের মূল্যায়ন করা হবে। তবে দলের গুরুত্বপূর্ণ অপর একজন নেতা বলেন, আমানউল্লাহ আমান ও আমিনুল হক কমিটি এবং পরের সাইফুল আলম নিরব ও আমিনুল হকের কমিটির বেশ কয়েকজনকে পদোন্নতি দিয়ে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে উত্তরে সাংগঠনিক দক্ষ, গ্রহনযোগ্য ও ক্লিন ইমেজের কোনো নেতাকে সভাপতি অথবা আহ্বায়ক করা হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরের কমিটিতে আমিনুল হককে সভাপতি অথবা আহ্বায়ক হিসেবে আলোচনায় রয়েছে। আমিনুল হক সাবেক জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ছিলেন। এছাড়াও আগে উত্তরের দুবার সদস্য সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মামলা ও নির্যাতনের শিকার এই নেতা বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছেন। একই পদে সাবেক আহ্বায়ক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরবেরও নাম শোনা যাচ্ছে। আবার আলোচনায় এসেছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারেরও নাম। তিনি সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ছিলেন। আলোচনায় আছেন এমএ কাইয়ুমও। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অন্যদিকে সদস্য সচিব বা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আক্তার হোসেন, এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ, এস এম জাহাঙ্গীর, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, মামুন হাসান, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ফখরুল ইসলাম রবিনসহ এক ডজন নেতার নাম আলোচনায় রয়েছে। তাদের মধ্যে আক্তার হোসেন, এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন এর আগে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
দলের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা বলেন, উত্তরে এক সময় বিএনপির কমিটি গঠন করতে চিন্তা করতে হতো, এখন সেই অবস্থা নেই। বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক বহু নেতা আছেন যারা এখন দায়িত্ব পালনের মতো যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
সাইফুল আলম নীরব বলেন, জেল-জুলুম, হামলা-মামলা সবই শিকার হতে হয়েছে। সব সময় নেতাকর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।
আমিনুল হক বলেন, কমিটি স্বাভাবিক নিয়মে ভেঙেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এখন আবার স্বাভাবিক নিয়মেই কমিটি হবে। মহানগর উত্তরে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছি। উত্তরের এমন কোনো নেতাকর্মী, সমর্থক নেই যাদের পাশে দাঁড়ায়নি। দলকে শক্তিশালী করতে যা যা প্রয়োজন সব করেছি। কাজের মূল্যায়নের প্রত্যাশা তো করতেই পারি।
আক্তার হোসেন বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমান এর আগেও গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখেছিলেন। কাজের মধ্য নিয়ে সাংগঠনিক দক্ষতা প্রমান করার চেষ্টা করেছি। নেতাকর্মীরাও সব সময় আমাকে পাশে পেয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে ৯৬ পি মামলা রয়েছে। জেল খেটেছি ১৮বার।
কফিলউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, তিন যুগ থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এমন কোনো জায়গা নেই নেতাকর্মীদের পাশে থাকিনি। সব কিছু বিবেচনা করে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে বলে বিশ্বাস করি।