খাল-নদী দখল করেছে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা: এলডিপি মহাসচিব
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম
![খাল-নদী দখল করেছে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা: এলডিপি মহাসচিব](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/09/24/Untitled-1-66f2ee4dc4eba.jpg)
বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেছেন, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনীতে বন্যার পরেও অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এমন বন্যা ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টির পেছনে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা দায়ী। তারা বিভিন্ন স্থানে খাল ও নদী দখল করে বাড়িঘর, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছে। বর্তমান সরকারকে এসব খাল-নদী উদ্ধার করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে রিভার এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ'র যৌথ আয়োজনে ‘বৃহত্তর নোয়াখালীতে বন্যা : কারণ, পুনর্বাসন ও স্থায়ী সমাধান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা ভারতকে শুধু দিয়েই গেছি, কিছু আদায় করতে পারিনি। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করি, ভারতের আশপাশের যে সকল দেশ আছে, সব দেশের সঙ্গে ভারতের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দাদা গিরির জন্য ভারতবিরোধী একটা মনোভাব আছে। আমরাও চাই, আমরা অনেক ছাড় দিয়েছি। আর ছাড় দেব না। এখন আমরা ভারতের চোখে চোখ রেখে, চোখ রাঙিয়ে কথা বলে আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায় করব।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, কিছুদিন আগে নদী কমিশনের চেয়ারম্যান নদী দখলের বিষয়ে একজন মন্ত্রীর (দীপু মনি) দিকে আঙুল তাক করায় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাকে সরে যেতে হয়। এই দখলদারির পেছনে যেমন রাজনৈতিক কারণ আছে, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরাও জড়িত। তাদের কোনো দল নেই। যারা যখন ক্ষমতায় তারা তাকে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন এলাকায় এরকম অসংখ্য খাল দখল করা হয়েছে। যেখানে বাড়িঘর পর্যন্ত উঠে গেছে। এসব কারণে অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকারকে এসব খাল উদ্ধার করে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা রিজওয়ান হাসানের উদ্দেশ্যে শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, যে উপদেষ্টা পরিবেশ নিয়ে, নদী দখল নিয়ে, খাল দখল নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ কথা বলেন, টক শো করে উপদেষ্টা পদে এসেছেন, ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানে; আমরা তার কথা শুনতে আর চাই না। কথা নয়, এবার কাজ করে দেখান। কিছু খাল উদ্ধার করে দেখান। নদী উদ্ধার করে দেখান।
এলডিপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করত, তারা কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে। কেউ কেউ বিশ্বাস করত, তারা কেয়ামতের পরেও ক্ষমতায় থাকবে। আমরা গত ১৫ বছর ভোট চোর সরকারের বিরুদ্ধে দিবানিশি লড়াই করে গেছি। আমরা জেলে গিয়েছি। নির্যাতিত হয়েছি। রাতের পর রাত অন্ধকারে ছিলাম। ঘরে ঘুমাতে পারিনি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। আমরা মন থেকে বিশ্বাস করতাম স্বৈরশাসকের পতন হবেই।
সভায় বক্তারা বলেন, এ রকম বন্যা এর আগে কেউ দেখেনি। তারা বন্যা প্রতিরোধে এ অঞ্চলের নদী - খাল খনন ও দখলমুক্ত করার পরামর্শ দেন। আওয়ামী লীগ নদী ও খালের দখল উদ্ধারে ব্যর্থ ছিল বলেও মন্তব্য করেন তারা।
জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির চেয়ারম্যান কবি মু. নজরুল ইসলাম তামিজীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন নদী ও পরিবেশ গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমেদ; স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মনির হোসেন চৌধুরী; লেখক ও নদী গবেষক শেখ রোকন; ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা বিভাগের প্রধান মো. ইকবাল ফারুক; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জসিম উদ্দিন; বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মোল্লা; শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একোয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী; অধ্যাপক ডাঃ বিজয় কুমার দাস,সঞ্জয় কুমার দত্ত, সুপ্রীম কোর্ট এর আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান,জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো.মঞ্জুর হোসেন ঈসা, অ্যাডভোকেট মো. আনোয়ার হোসেন, মনিরুল ইসলাম মনির,সানজিদা আনোয়ার চৌধুরী,আরডিআরসি'র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ, সাংবাদিক, লেখক, পরিবেশ গবেষক হোসেন সোহেল; ছায়াতল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সোহেল রানা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠন এর প্রতিষ্ঠাতা ইসমাইল গাজী।মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জহিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠান শেষে বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলে যারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাড়িয়েছে তাদের কয়েকজনকে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশেষ স্মারক সম্মাননা প্রদান করা হয়।