গণফোরাম প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ড. কামাল হোসেনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও নানা সিদ্ধান্তের ফলে খুব বেশিদিন কেউই থাকতে পারেননি দলটিতে। প্রতিষ্ঠাকালীন অনেক সদস্যই বহু আগে সংগঠন ছেড়েছেন।
তবে এর মধ্যে বড় ঘটনাটি ঘটে ২০২০ সালে করোনা মহামারির মধ্যে। সে বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে বর্ধিত সভা করে আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যায় দলটি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এবার ঐক্যবদ্ধভাবে যাত্রা শুরু করেছে গণফোরামের দুই অংশ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে যৌথ ঘোষণা পাঠ করেন গণফোরাম এক অংশের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসিন মন্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
এসময় বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট এসএম আলতাফ হোসেন ও ডাক্তার মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।
উভয় অংশের যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, ১৯৯৩ সনের ২৭-২৯ আগস্ট ৩ দিনব্যাপী সারা বাংলাদেশের সচেতন, প্রগতিশীল জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সংগঠন এবং সমাজের সর্বস্তরের নাগরিক সমাজ ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বরে এক রাজনৈতিক জাতীয় কনভেনশন ও কর্মশালার আয়োজন করে। জাতীয় কনভেনশনের সমাপ্তি ২৯ আগস্ট ১৯৯৩ অংশগ্রহণকারী সকলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব ও বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরামের আত্মপ্রকাশ হয়।
এতে আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠার সুদীর্ঘ ৩১ বছরে অগণিত নেতা-কর্মী মেধা ও শ্রমের সমন্বয়ে এবং ড. কামাল হোসেনের আপোষহীন নেতৃত্বের কারণে ‘গণফোরাম’ আজকে দেশের সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থেকে একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক এবং আদর্শিক দল হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি অবিস্মরণীয় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। সহস্রাধিক ছাত্র-জনতা, শিশু-কিশোরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, আহত হয়েছে ২০ হাজারের অধিক ছাত্র-জনতা। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশ এবং জাতির সামনে এক অভূতপূর্ব সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। গণফোরাম সফল গণঅভ্যুত্থানের অঙ্গীকার এবং সত্যিকার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ দেশের সব জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যৌথ ঘোষণায় আরও বলা হয়, ৩১ বছরের ধারাবাহিকতায় গণফোরামের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী সংগঠক ও সমর্থকদের পক্ষ থেকে আমরা আজকে এই শুভদিনে আমাদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে গণফোরাম ঐক্যবদ্ধভাবে সকল স্তরে রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও সামাজিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি।