বিএনপির সঙ্গে আমার সম্পর্ক রক্তের: শামা ওবায়েদের ‘বিশেষ বার্তা’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০২:০৬ পিএম
ফরিদপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ হারানো শামা ওবায়েদ বিবৃতি দিয়ে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আবেগঘন বিশেষ বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি।
আমি শামা ওবায়েদ, স্বাধীনতার ঘোষক, সেক্টর কমান্ডার ও রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ১৯ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে আমার অবস্থান তুলে ধরছি।
প্রথমত, আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত কেএম ওবায়দুর রহমানের জন্মস্থান এবং আমার শেষ ঠিকানা ফরিদপুরের নগরকান্দায় ২১ আগস্ট ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনায় গণমানুষের আকাঙক্ষা পূরণের দল বিএনপির মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের দিক নির্দেশনায় সাংগঠনিক যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তাকে আমি পূর্নাঙ্গ সমর্থন জানাই।
পরবর্তী সময়ে ২৪ আগস্ট আমাকে আসামী করে একটি হত্যা মামলায় করা হয়েছে। সংঘর্ষ এবং পরবর্তী মামলার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই আমি।
দ্বিতীয়ত, গেল ১৮ বছর আওয়ামী জাহিলিয়াতের সময় গুম, খুন, জেল, জুলুমসহ সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এমন ধ্বংসযজ্ঞ থেকে পূণরুদ্ধারের জন্য বিএনপির আন্দোলন এখনও চলমান রয়েছে। জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত গণহত্যাকে উপেক্ষা করে ছাত্রজনতা ও গণতন্ত্রকামী সব শ্রেণিপেশার মানুষের সমর্থন ও সক্রিয় অংশগ্রহণে প্রবল প্রতিরোধের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যায়। যার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা লাভ করে। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকার দেশ পুনর্গঠন ও সংস্কারের যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে দেশী বিদেশী সবার সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত আছে।
রক্তের বিনিময়ে যে অর্জন তা এখনও শুকায়নি। এমন পরিস্থিতিতে আমার জন্মস্থান তথা আমার শেষ ঠিকানা ফরিদপুরের নগরকান্দা সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এখনও অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের পাশে দাঁড়ানোই এখন আমার এলাকার মানুষের প্রত্যাশা।
এখানে কোন রাজনৈতিক বিভাজন, নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা, মনোনয়ন বিজয় তোড়ন নির্মাণ বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তারে শোডাউন কাম্য নয়।
গেল ২১ আগস্ট ফরিদপুরে সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দলের পক্ষ থেকে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমি চালিয়ে যাচ্ছি। ২১ আগস্টের সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনা আমি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করছি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেককেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও নামসহ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে সংঘর্ষকারীদের পরিচয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য।
তৃতীয়ত, দেশ-বিদেশে অবস্থানরত আমার শুভানুধ্যায়ীদের নানা ধরনের উৎকণ্ঠা, উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে আমার নিজের অবস্থান তুলে ধরলাম। সবাইকে দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলার অনুরোধ করছি।
সবশেষ: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত খালেদা জিয়া, ১/১১ এর অবৈধ সরকারের নির্যাতনের শিকার গুরুতর আহত বিএনপির মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, ভাইস চেয়ারম্যানবৃন্দ, উপদেষ্টাবৃন্দ, যুগ্ম মহাসচিববৃন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দ, নির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ, দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সংগ্রামরত সব পেশাজীবী সংগঠনসহ দেশে বিদেশে অবস্থানরত সর্বোপরি বিএনপির সঙ্গে আমার সম্পর্ক রক্তের।
যেকোন পরিস্থিতিতে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে দল নির্ধারিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমি সচেষ্ট থাকব।