ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার সফল অভ্যুত্থানের পর একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে যে অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জ কাঁধে তুলে নিয়েছে, তাদেরকে অযাচিত চাপ নয়, ধৈর্য ধরে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। 

শুক্রবার ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছা ও তাদের সাফল্য কামনা করে এক যুক্ত বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। 

গণমাধ্যমে পাঠানো এ বিবৃতিতে দুই নেতা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে যে পরিস্থিতির মধ্যে যাচ্ছে সেটা এক অভূতপূর্ব নতুন পরিস্থিতি। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের পেশাগত দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতীয়ভাবে বিভক্তি তৈরি করা হয়েছে সর্বক্ষেত্রে। এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ বিরাজ করার শংকা তৈরি হয়, যা দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। 

নেতারা দাবি করে বলেন, শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী একদলীয় শাসন দেশে গৃহযুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষ নিয়ে আসবে- তা আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলাম। আজকে তাই নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাঁধে এক মহা কঠিন চ্যলেঞ্জ। একদিকে গত ১৬ বছরে হাজার হাজার গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, নির্বিচার জুলুম নির্যাতনের সুবিচারের প্রশ্ন! অন্যদিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল, নির্লজ্জ দলীয়করণ, লক্ষ লক্ষ মানুষকে তাদের পেশা ও ব্যবসা জীবনে বঞ্চনা-শোষনের মাধ্যমে নিঃশেষ করে দেওয়ার করুণ ইতিহাসের সুষ্ঠু সমাধান এবং ক্ষতিপূরণের নৈতিক দায়! 

জনগণ বছরের পর বছর ভোট দিতে পারেনি উল্লেখ করে দুই নেতা বলেন, নিজ গৃহ থেকে উচ্ছেদ হয়ে দেশান্তরী হতে হয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষকে। অন্যায়ভাবে নিজের কর্মস্থল ও পেশা হারিয়েছেন অগণিত মানুষ। এ রকম বহুবিধ প্রত্যাশার চাপ নিয়ে পৃথিবীতে কোনো অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছেন কিনা, তা আমাদের জানা নেই। 

এবি পার্টির নেতারা সমস্ত দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিককে এ সরকারের ওপর এখনই নানামুখী চাপ সৃষ্টি না করে ধৈর্যশীলতার সঙ্গে সহযোগিতামূলক মনোভাব পোষন করার আহ্বান জানান। 

তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ড. ইউনুস এবং তার নতুন অন্তবর্তী টিম সর্বাত্মক আন্তরিকতা, অভিজ্ঞতা ও পরিশ্রমী মনোভাব নিয়ে কাজ করলে ছাত্র-জনতার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব। 

নেতারা বলেন, জনগণ আশা করে, অন্তর্বর্তী সরকার সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে নির্দিষ্ট সময়ে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন এবং বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে ঘুরে দাঁড়ানোর দিক নির্দেশনা দেবেন।