সন্তানদের কাঁধে ভর করে যারা সরকার উৎখাতের নীলনকশা করে তাদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি: পরশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৪০ পিএম
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, আজকে জাতিসংঘ আমাদের এ হতাহতের ঘটনা তদন্তে অংশগ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহ ব্যক্ত করেছে। বর্তমান সরকারও তাদের স্বাগত জানিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় প্রকৃত তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার কতটা আন্তরিক।
তিনি বলেন, সুতরাং আমাদের কোমলমতি সন্তানদের কাঁধে ভর করে যারা সরকার উৎখাতের নীলনকশা ও চক্রান্ত করেছিল এবং যারা হতাহতের ঘটনায় জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়ার সফল সমাধান হবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দুপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্ট মর্মন্তুদ হত্যাকাণ্ডে নিহত সব শহিদ স্মরণে কুরআন খতম, দোয়া ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়।
পরশ বলেন, আজকে শোকাবহ আগস্ট মাসের প্রথম দিন। এই শোকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সম্প্রতি হতাহতের বেদনা। এই ধ্বংসলীলা। বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অতিগর্হিত অপচেষ্টা; সেই নীলনকশা। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যেই স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শত্রুরা জড়িত ছিল।
শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, সেই শত্রুদের উত্তরসূরিরা আজকের এই আগ্রাসন এবং ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে। তাদের ধ্বংসলীলার ধরন দেখেই বোঝা যায় তারা অতি পরিচিত। যেভাবে রগ কেটে, যেভাবে অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংসলীলা চালনো হয়েছিল একাত্তরে, ২০১৩ সালে এবং বিভিন্ন সময় সেই একই ধরন, একই প্রক্রিয়া এখানেও উপস্থিত। আজকে অবশেষে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার একটি নির্বাহী ঘোষণা আসতে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠন এ দাবি করে আসছিল।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন এই জামায়াত-শিবিরকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিল ৭৫-এর খুনি জিয়াউর রহমান। খুনি জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতা এবং মদদেই এই জামায়াত-শিবির বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায়। আজকে এ ঘোষণা আসার পরে ওরা আবারও মরণ কামড় দিতে পারে। আপনাদের এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে এবং নিঃশর্তভাবে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
পরশ বলেন, সম্প্রতিকালে আপনারা যে সাহসিকতার সঙ্গে এদের আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছে, নিহত হয়েছে, সবার প্রতি সমবেদনা এবং সাধারণ ছাত্ররা, সাধারণ মানুষ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিক নিহত এবং আহত হয়েছে তাদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি।
এ কর্মসূচি শেষে সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের হামলায় আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যান বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
আলহাজ মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি বলেন, আপনারা দেখেছেন তারা কিভাবে সারা দেশে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা তারা ধ্বংস করেছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিকদের কি নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী তাদের হামলায় আহত। এ রকম নৃশংস-নির্মম হামলা কোন সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব না।
তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা সারা বাংলাদেশে এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। ৭১-এর পরাজিত শক্তি, ৭৫-এর পরাজিত শক্তি, সবশক্তি এক সাথে মিলে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এই ধ্বংসলীলা চালানো হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রাণপণ চেষ্টা করেছে মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য।
তিনি আরও বলেন, আসুন আমরা সবাই এক্যবদ্ধ হই। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে যে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে সেই বাংলাদেশকে রুখে দেওয়ার জন্য এই অপচেষ্টা। বাংলার মানুষ আজকে সজাগ হয়েছে, তারা বুঝতে পেরেছে, এটা কোনো কোটা আন্দোলনকারীর আন্দোলন নয়। কোটা তো সরকার মেনে নিয়েছে। তাহলে এটা কিসের আন্দোলন? এটা হলো দেশ ধ্বংস করার আন্দোলন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান পবন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, জসিম মাতুব্বর, আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম, সোহেল পারভেজ, আবু মনির মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাডভোকেট ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল হাই, উপ-দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুর রহমান, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।