রাসেলকে কোন আয়নাঘরে বন্দি রাখা হয়েছে, প্রশ্ন রিজভীর
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৫ পিএম
ছাত্রদল নেতা আতিকুর রহমান রাসেলকে কোন আয়নাঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে শ্রমিক দলের কার্যালয়ে ছাত্রদলের উদ্যোগে নিখোঁজ সংগঠনটির নেতা আতিকুর রহমান রাসেলের সন্ধানের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে আতিকুর রহমান রাসেল নেই, আমরা সবাই জানি, তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই ধরে নিয়ে গেছে। খবরের কাগজেও এসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরাই তাকে ধরে নিয়ে গেছে কিন্তু এখনো তাকে হাজির করছে না, না আদালতে না তার পরিবারের কাছে। মা হারা একটি ছেলে কোথায় খাচ্ছে, কোথায় ঘুমাচ্ছ- কোনো জায়গায় শুয়ে আছে, কোন আয়নাঘরে তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে— আমরা জানি না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি না পরিপত্র জারি করেছিলেন যে, কোটা থাকবে না। আবার আদালত থেকে এটা হলো কেন? আমাদের কাছে তো মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আদালতের যেন একটা টেলিপ্যাথিক সম্পর্ক আছে। অর্থাৎ শেখ হাসিনা যেটা ভাবেন আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে সেটা চলে আসে— এটাই তো আমরা দেখছি। সরকার যেটা চান, সেটা আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে চলে আসে। এই টেলিপ্যাথিক সম্পর্কটা হয় কি করে? এই যে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাশ ছেড়ে প্রতিদিন রাজপথে নেমে আসছে, এটা কি অন্যায়? এটা কি অনায্য?
রিজভী বলেন, রাসেলের সন্ধানের দাবিতে তার পিতার যে আকুতি আমরা এখানে শুনলাম। এভাবেই বাংলাদেশের আকাশে প্রতিনিয়ত অসংখ্য উল্কাপাত ঘটিয়েছেন এই ডামি সরকারের প্রধানমন্ত্রী। আমরা কোন দেশে বাস করি, এমন একটি দেশ যেখানে মনে হচ্ছে— চারদিকে পাহাড়ের গুহা। সেই পাহাড়ের গুহা থেকে দস্যুদল এসে কোমলমতি ছাত্রদের ধরে নিয়ে যাবে, তরুণদের ধরে নিয়ে যাবে এবং নিরুদ্দেশ করে দেবে।
সমমনা দল ও জোটের সঙ্গে বসছে বিএনপি
তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটি মাফিয়া সিন্ডিকেটের অধীনে বসবাস করছি, যেখানে প্রতিবাদের ভাষা হয়, যারা প্রতিবাদ করে তাদেরকে নিরুদ্দেশ করে দেওয়া, অন্যায়ের প্রতিবাদকারীদের রক্তাক্ত লাশ নদীর ধারে, খালের ধারে, নালার ধারে পড়ে থাকে। আমরা এমন একটি দেশে বাস করছি যে, দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তিনি এমন একটি সংস্কৃতি তৈরি করেছেন, মনে হয় তিনি ডামি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নন, একটি মাফিয়া সিন্ডিকেটের গডমাদার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আপনি কি তাহলে এই ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঢাকার জন্য আতিকুর রহমান রাসেলদের গুম করছেন? আপনি কি বেনজীরকাণ্ড, আপনি কি আজিজকাণ্ড, আপনি কি মতিউরকাণ্ড— এগুলোকে ঢাকার জন্য এসব করছেন? আমরা পৌরাণিক কাহিনি শুনেছি। আমরা যে গল্পের কথা শুনেছি, সেগুলোকেও হার মানাচ্ছে। বেনজীরের টাকা কত? বেনজীর কত জমি দখল করেছে? আমরা গণমাধ্যমে যা শুনতে পাচ্ছি, তার চাইতেও তো এদের সম্পদ বেশি হতে পারে। যদি পিএসসির একজন ড্রাইভার চতুর্থ শ্রেণির চাকরিজীবী তার যদি ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকার মতো সম্পদ পাওয়া যায়, তাহলে তাদের আরও কত বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।