জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, সরকার যেটা বলছে সরকারি লোকেরাই আস্থা রাখতে পারছে না। দেশের সরকারের ওপর আস্থাহীনতার কারণে দেশে কোটা ও পেনশন নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। এ আন্দোলন যৌক্তিক ও সমর্থনযোগ্য।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আস্থাহীনতা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ সরকারের প্রতি আস্থা পাচ্ছে না। সরকার তাদের অনুগতদের চাকরিতে নিয়ে আসছে মুক্তিযোদ্ধা কোটাকে ব্যবহার করে। আর এজন্য ছাত্ররা আন্দোলন করছে সরকার যেন চাপের মুখে সেটি তুলে নেয়।
সোমবার বিকাল ৩টায় রংপুরে দুই দিনের সফরে এসে সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ সরকারের ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না। সরকার দেশ পরিচালনা করছে ঋণ নিয়ে। সরকার যে টাকা বাজেট ঘোষণা করেছে সেটি ঋণ শোধ করতেই চলে যাবে।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সরকারের ঘনিষ্ঠজন। সরকারের সঙ্গে তারা সব সময় থাকে এবং সরকারের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে। সরকার বলছে নতুন পেনশন স্কিমে আরও বেশি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে; কিন্তু এরপরও শিক্ষকরা আস্থাহীনতার জায়গা থেকে আন্দোলন করছেন।
তিনি বলেন, তিস্তা প্রকল্প বিষয়টি সরকার জটিল করে তুলেছে। আমরা বিভিন্নভাবে বাহিরের শক্তির কাছে পরনির্ভর হয়েছি। সরকার জনগণের স্বার্থ চিন্তা না করে নিজেদের ক্ষমতায় থাকার চিন্তা করেছে। যদি পদ্মা সেতু ঋণ নিয়ে তৈরি করা হয়, তবে কেন তিস্তা মহাপরিকল্পনা ঋণ নিয়ে করা হবে না। এটি হলে গোটা দেশের মানুষ উপকৃত হবে।
জিএম কাদের বলেন, আমরা বলতে পারি ঋণ নিয়ে ঘি খাওয়ার মতো অবস্থা দেশে বিরাজ করছে। ফলে ঋণের বোঝা জনগণের ওপর পড়বে। ইতোমধ্যেই আমাদের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধ্স নেমেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার সব সময় বলেন ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনার কারণেই দেশের এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অথচ ভারতের মুদ্রাস্ফীতি অর্ধেকে নেমেছে, নেপালে মুদ্রাস্ফীতি কমেছে। দেউলিয়া দেশ শ্রীলংকা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সব দেশ এগিয়ে যাচ্ছে আর আমরা পিছিয়ে পড়ছি। সরকার দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করছে। সরকার অব্যবস্থা আর দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। অনেক অংকের টাকা ও অব্যবস্থার কারণে নষ্ট হচ্ছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, দুর্নীতির কারণে অনেক বড় বড় প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে সরকার, যেগুলোতে নষ্ট হচ্ছে টাকা। বিভিন্নভাবে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে সরকার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, জাহেদুল ইসলাম, জেলা যুবসংহতির সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম, মহানগর যুব সংহতির সদস্য সচিব ইউসুফ আহমেদ প্রমুখ। এছাড়া জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।