Logo
Logo
×

রাজনীতি

সাকিবকে সেদিন যা বলেছিলেন মেজর হাফিজ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:১২ পিএম

সাকিবকে সেদিন যা বলেছিলেন মেজর হাফিজ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দল ভাঙা গড়ার খেলা শুরু হয়েছিল। কিংস পার্টি গড়ে ক্ষমতার স্বাদ চেষ্টায় ছিলেন অনেকেই।  সেই পার্টিতে জনপ্রিয় নেতাদের পাশাপাশি সেলিব্রেটিদের ভেড়ানোর চেষ্টা ছিল। এরই অংশ হিসেবে স্বার্থান্বেষী মহলটি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও বিশ্ব সেরা ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে টার্গেট করে। নির্বাচনের আগে সাবেক দুজন সেনা কর্মকর্তা সাকিবকে মেজর হাফিজের বাসায় নিয়ে যায়। তখন বিএনএম গড়ার তোড়জোড় চলছিল।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিএনপির অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।   

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও ক্রিকেটার  সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ভাইরাল হওয়া ছবি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে  হাফিজ বলেন, ছবিটি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি সংবাদপত্র  মনের মাধুরী মিশিয়ে  নানা ধরনের সংবাদ প্রকাশ করছে।  

হাফিজ বলেন, সাবেক কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা বিএনএম গঠন করে (দ্বাদশ নির্বাচনের আগে) আমাকে সেখানে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানায় এবং তারাই সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আসে। সাকিব আমার কাছে এসে রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা জানায়। কিন্তু আমার কাছ থেকে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যায়।  হাফিজের দাবি, তিনি এমন কিছু করেননি যার জন্য লজ্জিত হতে হবে।

হাফিজ বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাই সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি দেশ সেরা ক্রিকেটার। বিশ্বখ্যাত অলরাউন্ডার। সাকিব আমার কাছে এসে রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করে। তাকে বিএনএম এর দুজন নেতা আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি বলেছি- রাজনীতি করা তোমার বিষয়। তুমি এখনো খেলাধুলা করছো, রাজনীতি করবে কিনা চিন্তাভাবনা করে দেখ। আমার কাছ থেকে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যায়। এ ঘটনা নির্বাচনের চার-পাঁচ মাস আগে হবে। যা হোক, যখন ক্ষমতাসীনদের চাপ বাড়তে লাগলো, এমনকি তৎকালিন তথ্যমন্ত্রী ঘোষণাই দিয়ে দিলেন হাফিজ সাহেব শিগগিরই নতুন দল গঠন করবেন এবং নির্বাচনে যাবেন। তার পরের দিনই নির্বাচনের দুই মাস আগে আমি একটা সংবাদ সম্মেলন করি। সেখানে সবকিছুই বলেছি।

সংবাদ সম্মেলনে মেজর হাফিজ বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের বেশ আগে থেকেই দেশে নানা ধরনের তৎপরতা শুরু হয়। আমি সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পরেও অনেক অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, আমার সিনিয়র-জুনিয়র তাদের সঙ্গে আমার ওঠা বসা। তারা আমার বাসায় আসেন, আমি তাদের বাসায় যাই। এভাবে সেনাবাহিনীর পুরোনো সদস্য হিসেবে তাদের সঙ্গে আমার সখ্য গড়ে ওঠে। বিএনপির সঙ্গে মাঝে মাঝে আমার দ্বিমত থাকে। যা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পায়। অনেকেই মনে করেছে বিএনপি ত্যাগ করার জন্য আমি উন্মুখ হয়ে আছি। সরকারের পক্ষ থেকে যারা যোগাযোগ করেছে তাদেরকে আমি বলেছি, ৩২ বছর পর আমার পক্ষে দল ত্যাগ করা সম্ভব না। বয়স হয়েছে, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ, রাজনীতি থেকেই অবসর নিতে চাই।

বিএনপির অন্যতম জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সরকারের পক্ষ থেকে অনেক কিছু করা হয়েছে। যা আপনারা সবাই জানেন। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের পক্ষ থেকে এবং কিছু অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা বিএনএমে যোগ দিতে আমাকে অনেকবার অনুরোধ করেছেন। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত বন্ধুরা কয়েকবার আমার বাসায় এসেছেন। আমি প্রত্যেকবার বলেছি যে, না এ ধরনের কোন চিন্তা ভাবনা আমার মধ্যে নেই। আমি রাজি হইনি।

আরও পড়ুন: ৩২ বছর বিএনপি করি, দল কেন ছাড়ব: হাফিজ


সাকিব প্রসঙ্গে হাফিজ বলেন, সাকিব আল হাসানও নন্দিত ক্রীড়াবিদ। তার দোষত্রুটি থাকতে পারে, কিন্তু খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ইনকমপেয়ারেবল ইন বাংলাদেশ। রাজনীতি করুক যাই করুক এদেরকে হতাশ করে তারা খেলাধুলা ছেড়ে দিক এই ধরণের পরিস্থিতিতে ঠেলে দেবেন না।

হাফিজ বলেন, সাকিব আল হাসান দল করবেন, রাজনীতি করবেন এটা তার বিষয়। সেটি তিনিই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার সঙ্গে আমাকে যুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নাই। আমার সর্বশেষ কাজটা আপনারা দেখেন।

‘কী করেছি, কী অপরাধ করেছি আমি? আমি কি বিএনএমে যোগ দিয়েছি? দল ভেঙেছি? আমি তো দেশেই ছিলাম না। দুই মাস আগে আমার উদ্দেশ্য আমার পরিকল্পনা জনসম্মুখে প্রকাশ করে গেছি। তারপরে এসব মতলবি নিউজ আমাকে বিব্রত করে, দেশের তরুণ সমাজকে বিব্রত করে।’

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ নির্বাচনের আগে কিংস পার্টিতে যোগ দিতে মেজর হাফিজের বাসায় গিয়েছিলেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। গুঞ্জন রয়েছে সেখানে বিএনএমে যোগ দেওয়ার ফরম পূরণ করে মেজর হাফিজের হাতে জমা দেন তিনি। সেই ছবি ও সংবাদ সম্প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে স্পষ্ট করতে আজ সংবাদ সম্মেলন ডাকেন মেজর হাফিজ।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম