সংসদে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতেই নির্বাচনে অংশ নেয় জাতীয় পার্টি
সংসদ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৪, ১০:৩৯ পিএম
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল কারণ তারা সংবিধানে বিশ্বাস করে। তারা জানতেন নির্বাচনে হয়তো ভালো ফল করতে পারবেন না। তারপরও তারা গিয়েছিলেন যাতে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে।
তিনি আরও বলেন, কোনো সমস্যা হলে বলা হয় করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধ। এসব বলে লাভ নেই। নিজেদের কাঠামোগত সমস্যা বের করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রত্যেক দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। বাংলাদেশ কেন পারছে না। এগুলো নিয়ে সংসদে কথা বলতে হবে।
সোমবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা এসব কথা বলেন।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনোক্রমেই না জড়াতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এটার সঙ্গে বাংলাদেশের অখণ্ডতা জড়িত।
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দল এখানে এসেছে। তারা এপারেন্টিলি ফর ডেমোক্রেসি, ফর ইলেকশন। আমি মনে করি না সেটা সত্য। তারা এসেছেন তাদের ভূ-রাজনীতির কারণে। তারা চায় বাংলাদেশকে কোনো একটি প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত করতে। সরকারের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, কোনোক্রমেই আমরা যেন মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িয়ে না পড়ি। এটার সঙ্গে আমার দেশের অখণ্ডতা জড়িত আছে।
জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম কমানোর জন্য শুল্ক কমানো হয়েছে। কিন্তু জিনিসের দাম কমেনি। কেন দাম বাড়ছে? কেন আমরা সিন্ডিকেটকে কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করতে পারছি না। সিন্ডিকেট কি সরকারের চেয়ে শক্তিশালী? বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, মূল্যস্ফীতি এমন হয়েছে যে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। দুর্বল ব্যাংকিং খাত, ডলারের অস্থিতিশীল বিনিময় হার, রিজার্ভ হ্রাস এসব মিলে সার্বিক অর্থনীতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছ। এগুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
বর্তমান সরকার শক্তিশালী দাবি করে ব্যারিস্টার মাহমুদ বলেন, সংসদে ১৩ জন ছাড়া সবাই সরকারি দলের। কেন সরকার চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পারবে না। আশা করা হয়েছিল রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিম্নমুখী হবে। কিন্তু তা হচ্ছে না। তিনি বলেন, প্রতিবছর অর্থ পাচার হয়। কেন, কারা, কীভাবে পাচার করছে-এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে হবে। বিষয় যতই খারাপ হোক না কেন সংসদেই আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন টেকসই করতে হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচার বিভাগের ওপর আস্থা বাড়াতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেন ক্ষুণ্ন না হয় তা দেখতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার দাবি জানিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, তাদের নিজস্ব লোকবল থাকতে হবে। ডিসিদের রিটার্নিং অফিসার করা হয়। এটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য না। তারা সরকারের অংশ। তারা ফিট নন, এটাই বাস্তবতা।