‘ওবায়দুল কাদেরের ভাষায় কথা বলছেন সিইসি’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৩৯ পিএম
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ক্ষমতাসীন দলের ভাষায় কথা বলেছেন বলে অভিযোগ করেছে ভোট বর্জনের আন্দোলনে থাকা ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমরা নির্বাচন কমিশনকে লালকার্ড দেখিয়েছি…এটা যে কত যুক্তিসঙ্গত ছিল সেটা গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরেকবার প্রমাণ দিলেন। তিনি বললেন, ‘বিএনপি যদি এ নির্বাচন বানচাল করার কিংবা প্রতিহত করার চেষ্টা করে সেটা মোকাবিলার প্রস্তুতি তাদের আছে।’
সাকি বলেন, সিইসি এখন ওবায়দুল কাদের সাহেবের ভাষায় কথা বলছেন... উনি নাকি মোকাবিলা করবেন। উনার ভেতরে যে রাজনৈতিক জ্বালা আওয়ামী লীগের দলদাস সেটা আবারো পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, আজকের পত্রিকায় দেখলাম, ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার লাশ বানানোর পাঁয়তারা করছে, পরিকল্পনা করছে। আমরা বিএনপির নেতাদের বলি, সাবধান সতর্ক হয়ে যান… ওবায়দুল কাদের যা বলে তা কিন্তু করে… ২৮ অক্টোবর ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন ২৮ তারিখের মহাসমাবেশকে হেফাজতের পরিণতি দেবে। কিভাবে? এজেন্ট দিয়ে বোমা ফাটিয়ে সেখানে পরিকল্পিত সহিংসতা করে তার সমস্ত দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে তারা ক্র্যাকডাউন করেছে আমরা দেখেছি।
‘কাজেই ওবায়দুল কাদের সাহেব যেহেতু বলেছেন বিএনপি লাশ বানানোর চেষ্টা করছে। আর মানে ওনারা লাশ ফালাবেন এবং তার দায় চাপিয়ে দেবেন। কাজে আমাদের আন্দোলনে সতর্ক থাকতে হবে। ওবায়দুল কাদেরের এই সমস্ত পরিকল্পনা আন্দোলন ধবংসের চেষ্টা, সেই যে গণজাগরণ তৈরি হয়েছে সেই গণজাগরণকে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। আমরা পরিষ্কার করে বলি, ওবায়দুল কাদের সাহেব আওয়ামী লীগ সরকারের নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্র মানুষের কাছে আজকে উন্মোচিত। কাজেই আপনারা যত ষড়যন্ত্র করেন আপনাদের মুরুব্বিরা যতই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করুক, আমরা বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের ষড়যন্ত্রের ভালো পাহারা দিয়ে জনগনের সঙ্গে নিয়ে আপনাদেরকে ক্ষমতা থেকে তাড়িয়ে দেব, এ নির্বাচন বন্ধ করে মানুষের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো সেই লক্ষ্যে আন্দোলন চলবে।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জনে গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চ এ সমাবেশ করে। সমাবেশের পর নেতাকর্মীরা তোপখানা রোড, পল্টন মোড় ও বিজয়নগর সড়কে মিছিল করেন।
‘ওরা টাকা দিয়ে ভোটার আনার খেলা শুরু করেছে’
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে তারা ব্যবহার করেছে… মানুষকে জোর-জবরদস্তি করে কিভাবে ৭ তারিখে ভোটকেন্দ্রে আনা যায়। তারা সমগ্র প্রশাসনকে কার্যত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আজকে ব্যবহার করছে। এটা থেকে সরকারের রাজনৈতিক পরাজয় কতটা তা বোঝা যায়। একটু আগে আমাদের বন্ধু বললেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে শুরু করে দেশব্যাপী ইতোমধ্যে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করতে শুরু করেছেন। মানুষের নাকি একদিনের মজুরি অনেকে দুদিনের তিন দিনের মজুরির সমান টাকা দেওয়া হয়েছে…ভোটারদের হাতে পায়ে ধরছে ৭ তারিখে তাদের ভোটকেন্দ্রে হাজির করা যায় কিনা।
‘আমরা সরকারকে বলেছি, এ খেলা চলছে না, ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবে না। সর্বেশেষ দেশে দুই কোটি মানুষের সামাজিক সুরক্ষার কার্ডগুলো সেগুলো পর্যন্ত আজকে সরকারি দলের নেতারা নানা পর্যায়ে হাতিয়ে নিচ্ছে, মানুষকে তারা জিম্মি করেছে। ৭ তারিখে ভোটকেন্দ্রে হাজির না হলে সামাজিক সুরক্ষার কার্ড নাকি তাদের দেওয়া হবে না। সরকারকে বলি এ খেলা বন্ধ করুন।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমের সভাপতিত্বে সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম মোফাখারুল ইসলাম নওয়াব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া ১২ দলীয় জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণফোরাম-পিপলস পার্টি, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদ প্রভৃতি দল পল্টন মোড়, তোপখানা রোড ও বিজয়নগর সড়কে মিছিল করে পথচারীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করে।