‘বিষাক্ত ফুল’ দিয়ে ভোটের মাঠ সাজিয়েছে: গণতন্ত্র মঞ্চ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৪১ পিএম
সরকার ‘বিষাক্ত ফুল’ দিয়ে ভোটের মাঠ সাজিয়ে ‘একতরফ’ নির্বাচনের যে খেলা শুরু করেছে তা রুখে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এ হুঁশিয়ারি দেন।
সাইফুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- নির্বাচনের ফুল নাকি ফুটতে শুরু করেছে। এই ফুল বাগানের ফুল না। এই ফুল প্লাস্টিকের ফুল, ঘরের মধ্যে সাজিয়ে রাখে। যার কোনো গন্ধ নেই, দুর্গন্ধ নেই, সেই ফুল দিয়ে তিনি বাগান সাজানোর চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, আজকে সরকার মানুষের ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। সেজন্য নতুন প্রজন্ম না আগামী প্রজন্ম আপনাদের শুধু ভোট চোর না, শুধু ভোট ডাকাত না, জনগণের বিরুদ্ধে গণশত্রু হিসেবে আপনাদের আখ্যায়িত করবে।
সাইফুল হক বলেন, এবার জনগণ রাজপথে নেমেছেন। কেবলমাত্র বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য না, ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এই লড়াইয়ে বিজয় না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র মঞ্চ রাজপথে থাকবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব প্রায়ই খেলতে চান। তারা নাকি সেমিফাইনাল খেলে ফেলেছেন, এখন ফাইনাল খেলা বাকি। আমরা তো ভেবেছিলাম আওয়ামী লীগ প্রিমিয়ার লিগে খেলে, এখন দেথি পাইওনিয়ার লিগে খেলার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাইওনিয়ার লিগের দলকে বাগিয়ে নিয়ে গিয়ে ‘ফুল ফুটতে শুরু করেছে’-এই হচ্ছে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের নির্বাচন, এই হচ্ছে তাদের ফাইনাল খেলা।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী তিনি একদিন নিজেই বলেছেন, তাকে ছাড়া আওয়ামী লীগের সবাইকে নাকি কেনা যায়। উনি ভেবেছেন- বাংলাদেশের বোধ হয় সব দলের সবাইকে কেনা যায়। দল হিসেবে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে যখন অপরাপর রাজনৈতিক নেতাদের কেনাবেচার কাজকে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) অনুমোদন করেন, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তার যে আর কোনো জায়গা থাকে না, এটা পরিষ্কার। তিনি কি আর রাজনৈতিক নেতা আছেন?
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বোকা না, মানুষ জানে তাদের (সরকার) পায়ের তলায় মাটি নেই। বাংলাদেশের মানুষ জানে, আপনার দলের লোকেরা আজকে যারা নমিনেশনের জন্য ভিড় করছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এদের কারো টিকির নাগাল পাওয়া যাবে না।
সকাল সাড়ে ১১টায় তোপখানা রোড থেকে গণতন্ত্র মঞ্চের মিছিল শুরু হয়ে বিজয়নগর, শিল্পকলা একাডেমি সড়ক হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। এ মিছিলে নেতাকর্মীরা ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে অ্যাকশন, অ্যাকশন’ ‘শেখ হাসিনা তফসিল, জনগণ মানে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের হাবিবুর রহমান রিজু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রীতম দাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া ১২ দলীয় জোটের নওয়াব আলী আব্বাস, রাশেদ প্রধান, আসাদুর রহমান খান আসাদ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং অপর অংশের সদস্য সচিব ফারুক হাসানের নেতৃত্বে বিজয়নগর, পুরানা পল্টন ও নয়াপল্টনের সড়কে মিছিল করেছে।