আ.লীগে আবারও ফেরার প্রশ্নে যা বললেন বিএনপির ফজলুর রহমান
যোবায়ের আহসান জাবের
প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:২২ পিএম
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান এক সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি জনপ্রিয় বক্তা হিসেবে সব মহলে পরিচিত। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে অবহেলার শিকার হয়ে পরবর্তীতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগে যোগ দেন। ২০০১ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা সভাপতি পদ পান। বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় বসাতে চায় আমেরিকা’
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা ছড়াচ্ছেন ফজলুর রহমান আবার আওয়ামী লীগে যোগ দিতে যাচ্ছেন। এমন গুঞ্জন নিয়ে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক সম্প্রতি খোলামেলা কথা বলেছেন যুগান্তরের সঙ্গে।
ফজলুর রহমান বলেন, আমার (ফজলুর রহমান) কাছে মনে হয়েছে, আজকের যে আওয়ামী লীগ, এ আওয়ামী লীগে আমার দরকার কি? এ আওয়ামী লীগ তো চোর-বাটপাররা করবে।
যে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, রাতের বেলার ভোট দিয়ে এমপি হয়ে যাব। আবার হাত তালি দিয়ে ফুলের মালা গলায় দিয়ে রাস্তায় হাঁটে। এটা আমার কাছে ঘৃণা লাগে। বর্তমানের আওয়ামী লীগাররা মনে করে ভোট এমনিতেই হয়ে যাবে। সারা জীবন আদর্শের রাজনীতি করে আসছি, আমি কি এ আওয়ামী লীগ করব?
কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতার সমালোচনা করে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর বলেন, আমাদের এলাকায় একটা গ্রাম আছে— যারা চুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। শুধু তাই নয়, ভোটার লিস্টে যখন নাম লেখে, তখন তাদের পেশার জায়গায় নাম লেখে চুরি। এক কথায়— ওই গ্রামে সবাই চুরি করে। এদের মধ্যে শীর্ষ চোর নামে পরিচিত জোয়াদ্দার চোর। তাকে বাজারে দেখলে সবাই বলে বাজারে জোয়াদ্দার চোরকে দেখেছি। সবাই সাবধান থাকিস।
আমি জোয়াদ্দার চোরের দলটা আমি কেন করব? না হলে দল করলাম না। যারা রাতের বেলা ভোট মাইরা নিজেরা হাসাহাসি করে। গরুর মাংস দিয়ে ভাত খায়। আবার পর দিন ফুলের মালা গলায় দিয়ে মিছিল করে। এ দল আমাকে কেন করতে হবে? এ দলের সঙ্গে থাকতে হবে কেন?
তিনি বলেন, আমি আজকে ফজলুর রহমান। আমার টাকা না থাকতে পারে। এক কথায় টাকা নাই, পয়সা নেই। আমি এমপি-মন্ত্রী কিছুই না। আমাকে সালামও দেবে না কেউ।
কিন্তু আমার ছেলেকে কখনো বলবে না— ভোট চোরের ছেলে। আমার ছেলেকে কেউ ভোটডাকাতের ছেলে বলতে পারবে না। আমার ছেলেকে কেউ বলবে না— তুই নিশিরাতের এমপির ছেলে। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ছেলেমেয়েকে ভোটডাকাতের ছেলেমেয়ে বলে ডাকবে। তার ছেলেমেয়ে না থাকলে, ভাতিজাদের বলবে— তোর চাচা ভোটডাকাত ছিল। তোর চাচা প্রতিদিন মিথ্যা কথা বলত।
বন্ধু ওবায়দুল কাদেরের প্রসঙ্গ টেনে ফজলুর রহমান বলেন, ওই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ছিল তাজউদ্দীন আহমদ। আর ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সে দল আমাকে করতে বলেন আপনারা? যারা ভোট চুরি করে মন্ত্রী এমপি হয়। করব না রাজনীতি।
অনেকে বলেন— আপনি তো ৭৬ বয়সেও সুস্থ আছেন? আমি বলি— কেন সুস্থ আছি, জানো? তারা জিজ্ঞস করে কেন? আমি বলি— তারা যা করছে, তাদের পরিণতিটা যেন দেখে যেতে পারি, সেজন্য আল্লাহ আমাকে আরও বাঁচিয়ে রাখবেন।