সরকার পদত্যাগের এক দফার যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী শনিবার রাজধানী ঢাকায় গণমিছিল করবে বিএনপি।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, আমাদের একদফার আন্দোলন চলমান। সরকারের পদত্যাগসহ একদফা দাবিতে বিএনপিসহ সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক জোট ও দলসমূহ যুগপৎ ধারায় ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে গণআন্দোলন গড়ে তোলা ও সফল করার ঘোষণা দিয়েছে। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। এই একদফা দাবির যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার ঢাকায় গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতৃত্বে। এটা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি। সময়সূচি পরে জানানো হবে।’ অন্যান্য জোট ও দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই কর্মসূচি করবেন বলেও জানান রিজভী।
গত ১২ জুলাই একদফা আন্দোলনের ঘোষণার পর এ পর্যন্ত বিএনপিসহ সমমনা জোট ও দলগুলো ঢাকায় পদযাত্রা, মহাসমাবেশ, ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান, গণমিছিল ও কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি করে। সর্বশেষ গত ২৪ ও ২৫ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে কালো পতাকা মিছিল করেছেন তারা।
রিজভী বলেন, অবৈধ আওয়ামী সরকার নিজেদের অস্তিত্ব টিকানোর জন্য গণতন্ত্রকামী বিরোধী দলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আদালত, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলের কর্মসূচিকে বানচাল করার জন্য। জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সরকার তাদের শেষ অস্ত্র হিসেবে আদালতকে ব্যবহার করছে এক অমানবিক দমনের যন্ত্র হিসেবে।
তিনি বলেন, এ দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির মূল প্রতিপাদ্য ছিল গণতন্ত্র। কিন্তু বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা শুনলেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অস্থির হয়ে পড়ে। তাই স্বৈরাচারের উগ্রমূর্তির প্রতিফলনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ক্ষতবিক্ষত। আইন, বিচার, আদালত, প্রশাসন, পুলিশ সবকিছুই একাকার হয়ে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিগুলোর ওপর সর্বগ্রাসী আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার হিংসার পথে গণতন্ত্রের পক্ষের মজলুম নেতাদের নতজানু করতে না পেরে এখন আদালতকে মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে সাজা দেওয়ার হিড়িক শুরু করেছে। বর্তমান আওয়ামী সরকার ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশি সংস্করণ বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশে ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২০ জনের অধিক লোক ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সারা দেশে ৭০০ এর অধিক লোক মারা গেছে। অবৈধ সরকারের উদাসীনতার কারণেই লাশের সারি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ভারতে চাঁদে যেতে খরচ হয় ৬৫১ কোটি টাকা, অথচ বাংলাদেশে মশা নিধনের বাজেট প্রায় ২০০০ কোটি টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুল খালেক, মুনীর হোসেন প্রমুখ।