সাইবার নিরাপত্তা আইন ‘ভাঁওতাবাজি ও আইওয়াশ’: বিএনপির সেমিনারে বক্তারা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৩০ পিএম
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইনকে ‘ভাঁওতাবাজি ও আইওয়াশ’ বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। সোমবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম: দুঃশাসনের দেড় যুগ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিএনপি দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে মুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিত করবে। তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল করবে এবং মিডিয়া কমিশন গঠন করবে।
বিএনপি আয়োজিত এই সেমিনারের মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, দমনপীড়নমূলক কালাকানুন তৈরি করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে এই সরকার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর সরকারবিরোধী পোস্টে লাইক, কমেন্ট বা শেয়ার দিলেও আইনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ। বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন। গণফোরামের আবু সাইয়্যিদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, ন্যাপ ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি ড. রেজা কিবরিয়া, গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নূর বক্তৃতা করেন। পেশাজীবীদের মধ্যে বক্তৃতা করেন অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক রুহুল আমিন, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজের (একাংশ) সভাপতি এম আবদুল্লাহ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদের অন্যতম প্রধান অস্ত্র হচ্ছে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা, সরকার সেই কাজ করে আসছে। দেশে এত গণমাধ্যম দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তারা কাজ করতে পারছে না। তারা স্বাধীন নয়। স্বাধীনতার পর ৫২ বছরেও গণমাধ্যম স্বাধীন নয়।
‘গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়’-উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘দেশে করপোরেট মিডিয়া তৈরি করা হয়েছে। বড় বড় ব্যবসায়ীরা এর মালিক। তারা নিজেদের ব্যবসা, ব্যাংকের সুবিধা, টাকা পাচারসহ নিজেদের সব স্বার্থে ব্যবহারের জন্য এই করপোরেট সংস্কৃতি তৈরি করেছে। গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি রেখেছে। ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মী খুন করেছে। চল্লিশ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সুতরাং এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হলে সব শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে শুধু দেশের মানুষ নয় বিদেশীরাও বলছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। তারা সবাই আপনাদের সঙ্গে আছে। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেলিাম আবারও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে চলে যেতে বাধ্য করতে হবে। এরপর জনগণের ভোটে একটি দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।