হঠাৎ শ্রাবণকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে যা বললেন ছাত্রদলের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি
মানিক রাইহান বাপ্পী
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৩, ০৩:২৪ পিএম
কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও রাশেদ ইকবাল খান। ফাইল ছবি
ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাশেদ ইকবাল খানকে। সর্বশেষ তিনি দলের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
শ্রাবণের অসুস্থতার কারণে রাশেদ ইকবালকে ছাত্রদলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর যুগান্তরের বিশেষ সাক্ষাৎকারে সমসাময়িক নানা ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন রাশেদ ইকবাল খান।
এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, শ্রাবণকে ছাত্রদলের সভাপতি পদ থেকে কেন সরিয়ে দেওয়া হলো?
এ বিষয়ে রাশেদ ইকবাল বলেন, সংগঠনের যে সিদ্ধান্ত, সে সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান করি। যেহেতু সংগঠন করি, সেহেতু সংগঠনের সিদ্ধান্তকে আমরা বরণ করি। উনি (শ্রাবণ) একজন মেধাবী ছাত্রনেতা। এখনো ছাত্রনেতা আছেন। সংগঠনে উনার (শ্রাবণ) অনেক অবদান আছে। পাশাপাশি উনার সমৃদ্ধ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার রয়েছে বলে আমি মনে করি।
ছাত্রদলের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল বলেন, ‘সংগঠন আমাদের যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা একমাত্র মনোনিবেশের জায়গা। একমাত্র ভাবনার জায়গা। একমাত্র কর্মের জায়গা।’
আপনার শিক্ষা জীবন সম্পর্কে জানতে চাই?
রাশেদ ইকবাল বলেন, আমার শৈশব কেটেছে নরসিংদীর শিবপুর থানায়। সেখানে আমি সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। পরে ঢাকার খিলগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পাশ করেছি। এসএসসি সম্পন্ন করেছি গাজীপুর আনসার-ভিডিপি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে।
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেছি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছি।
শৈশবকাল সম্পর্কে জানতে চাই?
আমার শৈশবের অধিকাংশ সময় কেটেছে এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সেখান থেকেই আমার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। তা ছাড়া শৈশব ও কিশোরকাল কেটেছে প্রকৃতির সান্নিধ্যে, বর্ষায় খালবিলে মাছ ধরে।
শীতের সময় পাখির বাসার পেছনে ছুটে। গ্রাম্য খেলা, বিশেষ করে দারিয়াছুট, ক্রিকেট ও ফুটবল খেলে। এর পর নদীতে গোসল ও গাছ থেকে লাফ দিয়ে। এসব মিলিয়ে ছিল শৈশবটা আনন্দঘন। খুব সুখের স্মৃতি
এই সময়ে ছাত্রদলের নেতৃত্বে আসা কতটা কতটুকু চ্যালেঞ্জ?
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, আমার রাজনীতির প্রায় ১৬ বছর বয়স। এ দীর্ঘ সময় বিরোধী দলেই আছি। একবেলা আধাবেলা খেয়ে নিদ্রাহীন রজনী যাপন করে দিন কেটেছে। পুলিশের যন্ত্রণায় ঘুমাতে পারি না। গায়েবি মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করা হয়। আমাদের জেল জীবন রয়েছে। এক কথায় এগুলো আমাদের প্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলেছে। বর্তমানে যে বিষয়টা খুবই দুঃখজনক যে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও আমাদের গণতন্ত্রের জন্য লড়তে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে সকল দলের সঙ্গে সম্প্রীতি থাকার কথা ছিল। দেশের উন্নতি সমৃদ্ধির জন্য একমত হওয়ার কথা ছিল। সেটা হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, স্বাধীনতার এত বছর পরও মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মানুষের ভোটাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
এ বিষয়গুলো ব্যক্তিগতভাবে আমাকে ব্যাপক পীড়া দেয়। বর্তমানে দেশকে অগ্রসর নিয়ে ভাবার কথা ছিল। কিন্তু মৌলিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য লড়তে হচ্ছে এটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক। তারপরও দেশের ১৮ কোটি মানুষ আমাদের দলের দিকে তাকিয়েছে। সেই মানুষের চাওয়া পাওয়াকে সম্মান জানিয়ে রাজপথে স্বর্বস্ব বিলিয়ে দিচ্ছি।
আগামী নির্বাচনে ছাত্রদলের ভূমিকা কেমন হবে ?
আমরা চাই, সাড়ে চার কোটি তরুণ ভোটা হয়েছেন কিন্তু তারা মতামত জানানো বা ভোট প্রয়োগ করার সৌভাগ্যটুকু হয়নি। আমরা তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। আমরা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে চাই। আমার এদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। সর্বপরি আমরা বাংলাদেশকে একটি অসম্প্রদায়িক সুখী, সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।