মির্জা ফখরুল দেখতে যাওয়ার পর নূরকে জোরপূর্বক রিলিজের অভিযোগ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম
নূরকে দেখতে হাসপাতালে মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন নুরুল হক নূরকে দেখতে যান। এর পর পরই বিকাল ৫টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক নূরকে রিলিজ দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নূরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ এ অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতিকে দেখতে যাওয়ার পর পরই বিকাল ৫টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক নূরকে রিলিজ দিয়েছে। সরকারের চাপে হয়তো এটি করা হয়েছে। কিন্তু একজন আহত রোগীর সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন আচরণ দুঃখজনক। অথচ রিপোর্টে তার মাথায় ইনজুরি ধরা পড়েছে। পরে তাকে বাধ্য হয়ে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে নুরুল হক নূরকে দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব। এ সময় তার মাথায় হাত বুলিয়ে শরীরের খোঁজখবর নেন তিনি। পরে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলনকে দমন করার অংশ হিসেবেই নুরুল হক নূরের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ দলের নেতাকর্মীদের ওপর যেভাবে আক্রমণ হয়েছে, এ ঘটনা তারই ধারাবাহিকতা। তবে এভাবে ভয় দেখিয়ে চলমান আন্দোলনকে দমন করা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে জেগে উঠেছে তাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, সেই সময় তাদের (সরকার) ফ্যাসিবাদের যে চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে- সন্ত্রাস করে, ভয় দেখিয়ে, নির্যাতন করে এখান থেকে তারা বেরিয়ে আসতে চায়। জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবিতে যে আন্দোলন চলছে, তারা তা দমন করতে চায়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিনীর বিরুদ্ধে যে রায়, এটাও তারই একটি পদক্ষেপ। সন্ত্রাস করে, ভয় দেখিয়ে সাজানো রায় দিয়ে, সাজা দিয়ে, জেল-জুলুম করে তারা আন্দোলন দমন করতে চায়। কিন্তু জনগণ যখন জেগে ওঠে তখন ভয় দেখিয়ে, সাজা দিয়ে, আক্রমণ করে আন্দোলন দমন করা যায় না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। সেখানে কে কী বলছে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের আন্দোলনের মূল বিষয় হচ্ছে, এই সরকার যেহেতু ব্যর্থ হয়েছে, জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, জনগণ এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। জনগণের দাবি- এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। কে কী বলল না বলল, তাতে আন্দোলন দমন করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর হামলা-মামলা, জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এবং হয়রানি, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউল হত্যা ও বুয়েট শিক্ষার্থীদের আটকের প্রতিবাদে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ডাকে ছাত্র অধিকার পরিষদ। কিন্তু ছাত্র অধিকার পরিষদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির একই সময়ে পাল্টা কর্মসূচি দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা শাহবাগের দিক থেকে মিছিল নিয়ে টিএসসি আসামাত্রই তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এ সময় ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। নূর ও তার সহযোগীদের মারতে মারতে টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে নূরসহ বেশ কয়েজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন।