‘ছবি-ভিডিও প্রকাশ আ.লীগের দেউলিয়াত্বের প্রমাণ’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৩, ১২:০২ এএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ডিবি কার্যালয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে খাওয়ানোর ছবি-ভিডিও প্রকাশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ। আওয়ামী লীগ শিষ্টাচার জানে না। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ভদ্রতা আশা করা ঠিক না। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জন্ম থেকে সন্ত্রাসী দল। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। প্রাদেশিক পরিষদের ডেপুটি স্পিকারকে পিটিয়ে মেরেছিল তারা। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ টানা ১৭৩ দিন হরতালের সময় গানপাউডার দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল। লগি-বইঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল। এ রাষ্ট্রকেও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। আগুনসন্ত্রাস করে তারা, দোষ চাপানোর চেষ্টা করে বিএনপির ওপর।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হোন। আমাদের এক কথা, এক দাবি-শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। উত্তাল আন্দোলনের ঢেউয়ে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার বিএনপির জনসমর্থন দেখে ভয় পেয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলা দেশের ও গণতন্ত্রেরও ওপর হামলা। যিনি বাংলাদেশের জনগণের কাছে সত্যিকার অর্থেই একজন নেতা হিসাবে পরিচিত, তার (গয়েশ্বর) ওপর অমানবিকভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে।’ গয়েশ্বর ও আমানউল্লাহ আমানকে নতুন করে দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘বিএনপির আগের জ্বালাও-পোড়াওয়ের চেহরায় ফিরে এসেছে’-প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমিও আপনার সঙ্গে একমত, বিএনপি আগের চেহরায় ফিরে এসেছে। আর সেটা হচ্ছে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন, আন্দোলন।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিজেদের এই দেশের মালিক মনে করে।’ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ গণ-অবস্থানের দিন গাবতলীতে যুবলীগ, ছাত্রলীগ পুলিশের পোশাক পরে মাঠে নেমেছিল।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সহসভাপতি বদিউজ্জামান বাবুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোজ্জাদ্দেদ আলী বাবুর পরিচালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির প্রান্তিকবিষয়ক সম্পাদক অপর্ণা রায়, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি দেওয়ান সালাউদ্দিন, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
এদিকে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটির চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার ও মহাসচিব এসএন তরুণ দে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান। বিগত বছরগুলোয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের করুণ চিত্র দেখা গেছে দাবি করে তারা গয়েশ্বরের ওপর হামলায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।