‘আমি অনেক সৌভাগ্যবান যে এখনো জীবিত আছি’
মাহবুবুর রহমান রিপন, শিলং থেকে ফিরে
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৩, ০১:২৫ এএম
শিলং শহরের সানরাইজ গেস্টহাউজে সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একান্ত আলোচনা হয় যুগান্তরের।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে শোকরিয়া আদায় করছি, আমি এখনো জীবিত আছি। আমার অনেক সহকর্মীর মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা আমার মতো সৌভাগ্যবান হতে পারেনি। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন, অনেকের লাশও মেলেনি। সেই হিসাবে যদি ক্ষতির বিষয়টি বলি, আমার শারীরিক বা মানসিক ক্ষতির চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমাদের দেশের, স্বাধীনতার, জননিরাপত্তার, সার্বভৌমত্বের, স্বাধীন রাজনীতির এবং মানুষের অধিকারের, কথা বলার অধিকারের।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এসব কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।গত বুধবার শিলং শহরের সানরাইজ গেস্টহাউজে সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একান্ত আলোচনা হয় যুগান্তরের।
কবে দেশে ফিরছেন- এ প্রশ্নের উত্তরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি সোমবার ট্রাভেল পাশ হাতে পেয়েছি। আমি প্রায় ৫ বছর চিকিৎসাসেবার বাইরে আছি। এখানে দিল্লিতে আমার দুটি বড় অপারেশন হয়েছে। একটি কিডনিতে, অন্যটি ঘাড়ে। এছাড়া হার্টে তিনটি স্টেন্ট আছে। বছরে অন্তত একবার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করার কথা ছিল। যেটা হয়নি। বৈধ কাগজপত্র না থাকার কারণে শিলং থেকে বের হতে পারিনি। এখন আমি প্রথম যে কাজটি করতে চাই, তা হলো আমার স্বাস্থ্য পরীক্ষা। তারপর যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরতে চাই।
এছাড়া অন্য কোনো ইস্যু আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তো ট্রাভেল পাশ। ভারত সরকারের কিছু বিধিবিধান আছে, সেগুলো তারা করবে। এছাড়া কোর্টের রায়ের পর পুলিশ বিভাগের কিছু কাগজপত্রের বিষয় আছে। আশা করি, সেগুলো সময়মতো হয়ে যাবে।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধারের পর সেখানকার একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। এর পরদিন তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২০১৫ সালের ১১ মে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করে শিলং পুলিশ। প্রায় সাত বছর বিচার চলার পর এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে বেকসুর খালস দেন শিলং জজ আদালতের আপিল বিভাগ। তাকে দ্রুত দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশনা দেন আদালত।
এরপর দেশে ফিরতে ৮ মে ভারতের গৌহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার বরাবর ট্রাভেল পাশের আবেদন করেন তিনি।
সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে ট্রাভেল পাশ দেয়। সবশেষ গত ১২ জুন সোমবার রাতে দেশে ফেরার জন্য ট্রাভেল পাশ হাতে পান তিনি। এরপরই আলোচনা শুরু হয় কবে দেশে ফিরবেন তিনি।