শনিবার জামায়াতের সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের
গত এক দশকের বেশি সময় পর ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর প্রকাশ্য সমাবেশ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনা তৈরি হয়েছে। যে দলটিকে এতো বছর কোনো সভা সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি, নিজেদের কার্যালয়ে সভা করতে গেলেও যাদের গ্রেফতার হতে হয়েছে, সেই দল হঠাৎ কীভাবে রাজধানীতে সমাবেশ করতে পারল, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে অনেকের মধ্যে। এ ছাড়া বিএনপির সঙ্গে দলটির সম্পর্ক নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা।
বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনীতিতে 'পর্দার অন্তরালে' যেসব যোগাযোগ বা নানারকম হিসাবের চেষ্টা চলছে, তারই প্রতিফলন ঘটেছে জামায়াতের ইসলামীর সমাবেশের মাধ্যমে।
শনিবার ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের মিলনায়তনে সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী, যেখানে দলটির বহু নেতাকর্মী অংশ নেয়।
সেই সমাবেশ থেকে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়া, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, জামায়াতের নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মতো দাবি তোলা হয়েছে।
ওই সমাবেশের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে রোববার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জামায়াত মাঠে নামে নাই, তাদের মাঠে নামিয়েছে তাদের বিশ্বস্ত ঠিকানা, তাদের আসল মুরব্বি বিএনপি।’
ওই সমাবেশের প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর সভা থেকে যেভাবে আস্ফালন করা হয়েছে, এগুলো জামায়াতের বক্তব্য নয়, বিএনপির বক্তব্য। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক হচ্ছে জামায়াত। বিএনপি জামায়াতকে দিয়ে এসব কথা বলিয়েছে।’
অন্যদিকে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না কিছু প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেছেন,‘জামায়াতের ব্যাপারটা কিন্তু বিস্ময়কর। এতদিন তারা দেয়নি কেন? নতুন করে আবার পারমিশন দিল কেন? এই ব্যাখ্যা আমরা তাদের কাছে চাই।’
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সরকার একটা রাজনৈতিক সমীকরণের জায়গা থেকে পুরো বিষয়টা করছে... এ রকম অনুমান করার যথেষ্ট কারণ আছে।’
তবে এসব আলোচনা প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট এখন আর কার্যকর নেই, কিন্তু আমরা সরকারবিরোধী আন্দোলনে আছি।’
তিনি বলেন, ‘সভা সমাবেশ করা তো আমাদের রাজনৈতিক অধিকার। গত ১০ বছর ধরে আমাদের প্রকাশ্যে কোনো সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাদের হয়তো সেই বোধোদয় হয়েছে, তাই এখন অনুমতি দিয়েছে। এর অন্য কোনো কারণ আছে বলে আমরা মনে করি না।’