
সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিভিন্ন দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি গণঅবস্থান কাল। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সব বিভাগীয় শহরে একযোগে ৪ ঘণ্টার এ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি এবং সমমনা ৫৩ রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
রাজধানী ঢাকায় ৭ স্পটে গণঅবস্থান করবে সরকারবিরোধী এসব দল ও সংগঠন। গণঅবস্থান কর্মসূচি থেকে বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবিতে ১৬ জানুয়ারি এবং একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল গঠনের দিন ২৫ জানুয়ারি কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
নয়াপল্টনে গণঅবস্থানের অনুমতির জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে যান বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ও আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
বৈঠক শেষে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, ‘আমরা ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে সফল আলোচনা করেছি। বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচি করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর বাধা নেই। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফকিরাপুল থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত হবে এ কর্মসূচি।’
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, যারা অনুমতি চেয়েছেন তাদের আমরা বলেছি- ফুটপাতে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। বুধবার একটি অফিসিয়াল ডে (কর্মদিবস)। লাখ লাখ লোক অফিসে যাতায়াত করবেন। তাই তাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করেছি, রাস্তা বন্ধ করে যেন জনগণের দুর্ভোগ না হয়, গাড়ি বন্ধ না হয়। সেই শর্তে তাদের অনুমতি দিয়েছি। আশা করি তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। তাহলে আমাদের তরফ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তাসহ অন্যান্য সহযোগিতা পাবেন।'
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি বলেছি, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। যদি কোনো দল যান চলাচল স্বাভাবিক না রাখতে পারে, তাহলে দায়দায়িত্ব তারা বহন করবেন।
তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে অবস্থানের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার অনুমতি দিয়েছে। তবে শর্তের কোনো বিষয় নেই। অবস্থান কর্মসূচিতে ফুটপাত ধরে সড়ক বিভাজক পর্যন্ত, সড়কের একটি অংশে অবস্থান চলবে। বেলা দুইটায় কর্মসূচি শেষ করা হবে।
এদিকে বিএনপির পাশাপাশি সমমনা ৩৮ রাজনৈতিক দল, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ও ১৫ সংগঠনও গণঅবস্থান কর্মসূচিতে মাঠে থাকবে। তবে জামায়াতে ইসলামী গণঅবস্থান না করে দেশের সব মহানগরে আলোচনা সভা করবে।
দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম এক বিবৃতিতে জানান, ওয়ান-ইলেভেনের এ দিনটিকে তারা ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসাবে পালন করবে। দেশের সব মহানগরী শাখায় আলোচনা সভা হবে।
যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি ছিল গণমিছিল। বিএনপিসহ গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে সাত দলীয় গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জামায়াতে ইসলামী ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।
এসব দল ও জোটের পাশাপাশি এবার গণঅবস্থান কর্মসূচিতে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে চারদলীয় জোট বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য, মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরাম এবং ইয়ুথ ফোরাম, জিয়া নাগরিক সংসদ, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, জাতীয়তাবাদী চালকদলসহ ১৫টি সংগঠন।
রাজধানীতে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সাতটি স্পটে। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅবস্থান করবে বিএনপি।
একই সময়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণঅবস্থান করবে সাতদলীয় গণতন্ত্র মঞ্চ, পূর্ব পান্থপথের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে ১২ দলীয় জোট, পুরানা পল্টন মোড়ে ১২ দলের জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে (পূর্ব প্রান্তে) চারদলীয় বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য এবং আরামবাগে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে মোস্তফা মহসীন মন্টু নেতৃত্বাধীন গণফোরাম।