বিএনপির সঙ্গে সংলাপ
যুগপৎ আন্দোলনে থাকবে মন্টুর গণফোরাম
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:০০ পিএম
সরকার পতনে যুগপৎ আন্দোলনে রাজপথে থাকবে বলে জানিয়েছে মোস্তফা মোহসীন মন্টু নেতৃত্বাধীন গণফোরাম।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ শেষে এ কথা জানান নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা গণফোরামের সঙ্গে সংলাপ করেছি। আন্দোলন যখন শুরু করি তখন আহবান ছিল জাতীয় ঐক্যের। সেই জাতীয় ঐক্য আজকে হয়ে গেছে। এ সরকারের উচ্ছিষ্টভোগী যেসব দল রয়েছে তারা ব্যতীত সব দল পরিবর্তন চায়। একটি নিরপেক্ষ সরকার চায়, যার মাধ্যমে ভোটাধিকার ফিরে আসবে; যার ভোট সে দিতে পারবে। সেই ব্যাপারে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি। আগামী ১১ জানুয়ারি দেশব্যাপী গণঅবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, সেদিন গণফোরামও এই কর্মসূচি পালন করবে বলে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, আমরা চলমান আন্দোলনের শরিক হলাম। আজকের আন্দোলন একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দল-মত নির্বিশেষে সমস্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। আজকে যে সরকার আমাদের মাথার ওপর চেপে বসেছে এর হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ১৪ এবং ১৮ সালের যে নির্বাচন আমরা দেখেছি, এরপর এই সরকারের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন কেউ কখনো আশা করতে পারে না। সুতরাং এ চলমান আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। জনগণের অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা ক্ষমতা দখল করার জন্য নয়, জনগণকে ক্ষমতায়ন করার জন্য আন্দোলন করছি।
মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বে সংলাপে উপস্থিত ছিলেন- গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট একেএম জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন কাদের, সভাপতি পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুল হক সরকার, আব্দুল হাসিব চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক।
অন্যদিকে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম সদস্য স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।
গণফোরামের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। এর মধ্যে রয়েছে- দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত করে জাতীয় সরকার নিশ্চিত করতে হবে। খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ সব রাজবন্দির অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে, গায়েবি মামলা ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা বন্ধ করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যের সীমারেখা নির্ধারণ করা। রাষ্ট্রের ৩টি অঙ্গ নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বাধীনভাবে কাজ করার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে এবং একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান এবং রাষ্ট্রের প্রধান বা নির্বাহী প্রধান হতে পারবেন না।
সুব্রত চৌধুরী বলেন, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত করে রাষ্ট্রের কাঠামো বিধ্বস্ত করছে। রাষ্ট্রে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটাতে আন্দোলন তীব্রতর করতে হবে।