যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে শীর্ষ পদে আলোচনায় যারা

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২২, ১১:০৩ এএম

যুবদল। ফাইল ছবি
জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিরব-টুকুর নেতৃত্বাধীন যুবদল ৫ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। এ নিয়ে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এছাড়া সাবেক ছাত্রনেতাদের অনেককে যুবদলের নেতৃত্বে আনছে চাইছে বিএনপির হাইকমান্ড। এ কারণে যুবদলের কমিটি ভেঙে দিয়ে শিগগিরই নতুন কমিটি দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
এবার ৫ সদস্যের সুপার ফাইভ কিংবা সুপার সেভেন কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারিতে থাকা যুবনেতাদের পাশাপাশি এবারের কমিটিতে সাবেক ছাত্রনেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
কেন্দ্রে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গ সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব যে কোনো সময় ঘোষণা হতে পারে। কমিটির নেতৃত্ব ঠিক করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ইতোমধ্যে যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতাদের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন। এছাড়া তিনি সংগঠনটির সাবেক কয়েকজন শীর্ষ নেতা ও বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতার মতামত নিয়েছেন। তারা যুবদলের বর্তমান ও সাবেক ছাত্রনেতাদের নাম প্রস্তাব করেছেন।
গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবদলের কমিটি গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামত নেন তারেক রহমান। বেলা ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ৫১ জন নেতা পৃথকভাবে ভার্চুয়ালি মতামত দেন। তবে এই মতামত প্রক্রিয়ায় যুবদলের বর্তমান কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে রাখা হয়নি।
মতামত দেওয়া একাধিক নেতা জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাদের কয়েকটি প্রশ্ন করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন হলো-সাংগঠনিকভাবে যুবদলকে কীভাবে শক্তিশালী করা যেতে পারে? এক্ষেত্রে বর্তমান কমিটি রেখে, নাকি নতুন কমিটি করতে হবে? নতুন কমিটিতে কাকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যোগ্য মনে করেন? বেশিরভাগ নেতাই নতুন কমিটির পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যুবদলের শীর্ষ দুই পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে এক ডজন নেতা কেন্দ্রে জোর লবিং চালাচ্ছেন। তারা সবাই বর্তমান যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক শীর্ষস্থানীয় নেতা।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, নতুন কমিটির শীর্ষ পদে নতুন নেতৃত্ব আনার চিন্তাভাবনা চলছে। বর্তমান সভাপতি সাইফুল আলম নিরব থাকছেন না এটি মোটামুটি নিশ্চিত। নতুন কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আলোচনায় রয়েছেন- সংগঠনটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সহ-সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, মোনায়েম মুন্না, আলী আকবর চুন্নু, মাহবুবুল হাসান ভূইয়া পিংকু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান।
এছাড়া সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে যুবদলের শীর্ষ দুই পদের জন্য আলোচনায় রয়েছেন-ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, সাবেক সভাপতি রাজিব আহসান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন ও ইসহাক সরকার।
এ বিষয়ে সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু যুগান্তরকে বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সারা দেশে যুবদলকে সংগঠিত করতে কাজ করেছি। এখন হাইকমানন্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে তা মেনেই রাজনীতি করব।
নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। নতুন কমিটি হলে তিনি যোগ্য, ত্যাগীদেরই জায়গা দেবেন।
এসএম জাহাঙ্গীর বলেন, আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে যুবদলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আন্দোলন-সংগ্রামে যারা রাজপথে ছিলেন এবং থাকবেন তাদের দিয়েই নতুন কমিটি গঠন করা হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
আকরামুল হাসান বলেন, ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের সমন্বয়ে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি করার একটা রেওয়াজ রয়েছে। যারা যোগ্য ও ত্যাগী তাদের সমন্বয়ে নতুন কমিটি হবে বলে আশা করি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি সাইফুল আলম নিরবকে সভাপতি ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পর ১১৪ সদস্যের আবার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় ওই কমিটি দিয়েই চলছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যক্রম।