মান্নানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা বিএনপির। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা মেয়র এমএ মান্নানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে তার দল।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তার কফিন রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে আসা হলে সেটি দলীয় পতাকায় মুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা প্রয়াত সহকর্মীর প্রতি ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তারা সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। বিএনপি ছাড়াও দলের অঙ্গসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় মান্নানের কফিনে।
গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার পর মারা যান এমএ মান্নান। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
এমএ মান্নান আমৃত্যু বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। এর আগে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্বও পালন করেন। তৃণমূল থেকে উঠে আসা মান্নান গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির পদেও দায়িত্ব পালন করেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র মান্নান ১৯৯১ সালে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাকে খালেদা জিয়ার সরকারে প্রথমে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও পরে বিজ্ঞান প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
মান্নান কলেজে অধ্যাপনা থেকে ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলে (জাগদল) যোগ দিয়ে রাজনীতিতে নামেন। এই জাগদলই ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
মান্নান কাউলতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন। গাজীপুর সিটি করপোরেশন হলে প্রথম নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ২০১৩ সালে মেয়র নির্বাচিত হন মান্নান। কিন্তু এর পর তিনি গ্রেফতার হয়ে তিনি বছর কারাগারে ছিলেন।
বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে মান্নান দলের ভাইস চেয়ারম্যান হন। এর আগে তিনি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন।
শুক্রবার সকালে হাসপাতাল থেকে মান্নানের কফিন নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তার জানাজায় অংশ নেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন এ্যানি, দলের নেতা মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, হুমায়ুন কবির খান, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবু আশফাক খন্দকার, আনোয়ার হোসেইন, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।
জানাজার আগে প্রয়াত নেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এমএ মান্নানের ছেলে গাজীপুর মহানগর বিএনপি নেতা মনজুরুল করীম রনি তার প্রয়াত বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান।
পরে মান্নানের কফিন অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরে। সেখানে জুমার পর রাজবাড়ি মাঠে এবং আসরের পর সালনায় আরও দুই দফা জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।